বসন্ত উৎসবের শোভাযাত্রা বালুঘাটের একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
কোথাও পুলিশের সামনে দিনভর রাস্তার ধারে বিক্রি হল ভাঙের সরবত, কোথাও আবার উচ্চ গ্রামে বাজল ডিজে। মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া মোটরবাইক চালানো, চোলাই মদ বিক্রি, অশালীন আচরণ ও মারপিটের অভিযোগও উঠেছে। মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনাজপুর ও মালদহের বিভিন্ন এলাকায় দোল ও হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে এমনটাই দেখা গেল।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় দোল উপলক্ষে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেই সব উৎসবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের শামিল হতে দেখা যায়। রায়গঞ্জের দেবীনগর বসন্ত উৎসব কমিটির সভাপতি প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, “ছোটদের মধ্যে অ্যাডিনোভাইরাস রুখতে ও শালীনতা বজায় রাখতে আমাদের উৎসবে বাড়তি নজরদারি ছিল।”
অভিযোগ, ওই দিন দুপুর থেকে রায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সামনেই ভাঙের সরবত বিক্রি হয়। তা চলে বুধবার হোলির দিনেও। অভিযোগ, এ দিন রায়গঞ্জ-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় দিনভর ডিজে বাজানো হয়। সে সঙ্গে, জেলা জুড়ে মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালানো, চোলাই মদ বিক্রি, অশালীন আচরণ ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। রায়গঞ্জের মনিপাড়ায় দুই দল মহিলার মারপিটে বেশ কয়েক জন জখম হন। রায়গঞ্জ থানার আইসি সৌরভ সেনের দাবি, মঙ্গল ও বুধবার দু’দিন মিলিয়ে নানা অভিযোগে ৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার দোল উৎসবের আয়োজন করেছিল বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, সে সব অনুষ্ঠানে শামিল হয়ে জনসংযোগ সারেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। পুলিশ জানিয়েছে, দোল ও হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে গোলমাল করা ও বেপরোয়া মোটরবাইক চালানোর অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। চোলাই মদ তৈরির ১৫ লিটার তরল উপকরণ ও ৪৮ বোতল বেআইনি মদ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘‘হোলি ও দোল উৎসবে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে জেলা জুড়ে পুলিশের তল্লাশি ও টহলদারিজোরদার ছিল।’’
বুধবার, মালদহের বিভিন্ন বাজারে খাসির মাংস কেজি প্রতি প্রায় ১০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ দিন মালদহ শহরের রাস্তাঘাটে মালপোয়াও দেদার বিক্রি হয়েছে। অনুগামীদের সঙ্গে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে হোলি উৎসবে মাতেন ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। শহরের প্রান্তপল্লিতে বিলি করা হয় ঠান্ডা পানীয়। চলে নগরকীর্তনও। পুলিশের দাবি, মঙ্গল ও বুধবার জেলা জুড়ে প্রচুর বেআইনি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব।