প্রতীকী ছবি।
মালদহ জেলায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবা চালু না হওয়ায় ৩০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পেরিয়ে রোগীকে নিয়ে যেতে হচ্ছে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায়। তাতে হয়রানি ও ঝুঁকি— দুই-ই থাকছে।
দিনতিনেক আগেই মালদহ থেকে করোনা আক্রান্ত এক রোগীকে নিয়ে যাওয়ার সময় কিসানগঞ্জে অ্যাম্বুল্যান্সের চাকা ‘পাংচার’ হয়ে যায়। রোগী নিয়ে সেই গাড়ি মাঝরাস্তায় কয়েক ঘন্টা দাঁড়িয়েছিল। গাড়ি ঠিক করে শিলিগুড়ি পৌঁছতে হয়রান হন চালক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এই পরিস্থিতিতে মালদহে কেন কোভিড হাসপাতাল চালু করা হচ্ছে না— সেই প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই একাধিক রোগীকে আনতে হয়েছে মালদহ থেকে। বুধবারও মালদহ থেকে এক জন রোগীকে আনা হয়েছে মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে।
করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে শিলিগুড়িতে কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়। রাতারাতি সব এক সঙ্গে করা সম্ভব নয়।’’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, মালদহ, জলপাইগুড়ির মতো জেলায় করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো প্রস্তুত। সরকারি নির্দেশ পেলেই তা চালু করা হবে।
মালদহে কোভিড হাসপাতালের পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন চালু করা হচ্ছে না? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।’’
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতালে এই মুহূর্তে রোগীর সংখ্যা কম রয়েছে। রোগী রয়েছেন চার জন। শয্যা রয়েছে ১০০টির মতো। তাই একটি পরিকাঠামো যখন রয়েছে আপাতত সেখানেই রোগী পাঠানোর পক্ষে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদহ শহরের কাছাকাছি নারায়ণপুর বাইপাসে একটি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এই কোভিড হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তল করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাখা হয়েছে। দু’টি তলে মোট ৭০টি শয্যা রয়েছে। রয়েছে ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য পরিকাঠামো। একতলায় সন্দেহভাজন রোগীদের রাখতে ৩০ শয্যার ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (সারি) কেন্দ্র করা হয়েছে। ২৫ এপ্রিল থেকে সেই কেন্দ্র চালু করা হয়। সেই থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে যে আইসোলেশন ওয়ার্ডে সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের রাখা হচ্ছিল তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় তাঁদের নিয়ে রোগী, পরিজন এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।