Risky Level Crossing

‘রেলগেট বন্ধ হলেই কিছু মানুষের ব্যস্ততা বাড়ে’

রেলগেট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও শহরবাসীর একাংশ সময় বাঁচাতে, গেট গলিয়ে অন্য পারে গিয়ে উঠছেন।

Advertisement

অভিষেক সেনগুপ্ত

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ১০:০৫
Share:

ঝুঁকির পারাপার। জলপাইগুড়ি শহরের ৩ নম্বর গুমটি লেভেল ক্রসিংয়ে। ছবি সন্দীপ পাল।

Advertisement

বন্ধ রেলগেট। যে কোনও মুহূর্তে ট্রেন ঢুকবে। তবু লোকজনের যেন তাড়াহুড়োর শেষ নেই। রেলগেটের নীচ দিয়ে শরীর গলিয়ে লাইন পারাপার করছেন বিনা ভাবনায়। যেন কোনও ব্যাপারই নয়। এই পারাপারের তালিকায় অল্পবয়সি থেকে বয়স্ক—সবাই আছেন। এমনকি, বাচ্চাদের নিয়ে মহিলারাও ফোন কানে নিয়ে পার হচ্ছেন। বিপদের তোয়াক্কা না করেই। শিয়ালদহ মেন লাইনের খড়দহের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পরেও হুঁশ ফেরেনি অনেকেরই, বোঝা যায় জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের বিভিন্ন লেভেল ক্রসিংয়ের পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়ালে।

শহরের ১, ৩ ও ৪ নম্বর লেভেল ক্রসিং সংলগ্ন এলাকা সব সময়েই কর্মব্যস্ত থাকে। রেলগেট পড়লে, রাস্তায় লম্বা লাইন পড়ে যায় গাড়ি, মোটরবাইক, টোটো-সহ নানা যানবাহনের। রেলগেট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও শহরবাসীর একাংশ সময় বাঁচাতে, গেট গলিয়ে অন্য পারে গিয়ে উঠছেন। স্কুল-অফিস টাইমে এই ছবি বেশি দেখা যায়। সাইকেল, ব্যাটারি-চালিত মোটর সাইকেল, স্কুটার কাত করিয়ে টেনে-হিঁচড়ে দুই গেট পার করে অন্য পারের রাস্তায় ওঠার দৃশ্য হামেশাই চোখে পড়ে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। জনৈক রেলকর্মী বলেন, ‘‘কেউ রেলগেট বন্ধ থাকাকালীন হেঁটে বা বাহন নিয়ে লাইনে ঢুকলে তিনটি সিগন্যাল ভাঙেন। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা বোঝাচ্ছি। কিন্তু শহরবাসীর একাংশ এখনও সচেতন হচ্ছেন না।’’

Advertisement

আন্তর্জাতিক ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’, দার্জিলিং মেল, হলদিবাড়ি-কলকাতা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ছাড়াও, প্রতিদিন লোকাল ট্রেনও চলে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের উপর দিয়ে। ফলে, দিনে বেশ কয়েক বার বন্ধ রাখতে হয় রেলগেট। ট্রেন আসার আগে, গেটের কয়েক মিটার দূরেই লালবাতি জ্বলে ওঠে। বাজতে থাকে ‘হুটার’। তবে অভিযোগ, সে সব গ্রাহ্য না করেই লাইন পার হন অনেকে। ৩ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন এলাকার এক দোকানদার বলেন, ‘‘রেলগেট বন্ধ হলেই কিছু মানুষের ব্যস্ততা বাড়ে। দু’মিনিট দাঁড়াতেও তাঁদের আপত্তি! বড়দের এ ভাবে যেতে দেখে ছোটরাও যাচ্ছে।’’

একই ছবি রোড স্টেশন সংলগ্ন রেলগেটেও। অসমগামী প্রচুর ট্রেন ও মালগাড়ি এই স্টেশন ছুঁয়ে যায়। গেট বন্ধ থাকলেও, হাল্কা বাহন নিয়ে কিংবা পায়ে হেঁটে পারপার করতে দেখা যায় অনেককেই। এ ভাবে লাইন পারাপারকারীদের একাংশের পাল্টা যুক্তি, এই লাইনে এক বার গেট পড়লে, একের পরে এক ট্রেন, মালগাড়ি যেতেই থাকে। দীর্ঘ সময় রেলগেট বন্ধ থাকায় এই পন্থা নিতে হচ্ছে। তবে ঝুঁকির যাতায়াত বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক রেল, এমনটাই চাইছেন শহরের সচেতন মানুষজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement