ছবি: সংগৃহীত
তারিখ ঘোষণা না হলেও ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বিভিন্ন পুরসভা এলাকায়। আর তা ফের উস্কে দিয়েছে মালদহের চাঁচলবাসীর ক্ষোভ, হতাশা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দু’দশক ধরে দাবি জানালেও পুরসভা হয়নি চাঁচল। মহকুমা সদর এখনও গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনেই রয়েছে। তাতে সঠিক পরিষেবা মিলছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, এর মধ্যে দু’বার চাঁচল পুরসভা করার ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। সে জন্য শাসকদলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। কবে পুরসভা হবে তা নিয়ে অবশ্য শাসকদলের পাশাপাশি প্রশাসনও নির্দিষ্ট কিছু জানায়নি।
মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে চাঁচলকে পুরসভা করার জন্য প্রয়োজনীয় সব নথি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো রয়েছে। নির্দেশ পেলেই প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।’’
২০০১ সালের ১ এপ্রিল চাঁচল মহকুমা গঠনের পর থেকেই সেখানে পুরসভার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পুরসভা করতে হলে ওই এলাকায় কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষের বসবাস থাকা দরকার। সেখানে ১০টি মৌজা নিয়ে প্রস্তাবিত চাঁচল পুরসভায় ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে জনসংখ্যা ৪২ হাজার ৮৭৯। সেই সংখ্যা এখন কয়েক গুণ বেড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ১৬ জুলাই রাজ্যে ১৩টি পুরসভা গঠনের কথা ঘোষণা করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। তার মধ্যে চাঁচলও ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১৪ সালের ১১ জুন তৃণমূল সরকারের তরফেও চাঁচলকে পুরসভা বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এখনও তা চালু হয়নি। তৃণমূল সূত্রে খবর, চাঁচল পুরসভার বিষয়টি দলীয় স্তরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানানো হয়েছিল। গত বিধানসভা ভোটের আগে চাঁচলে নির্বাচনী প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য সভায় চাঁচলে পুরসভা গঠনের কথা জানিয়েছিলেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, চাঁচল, মালতীপুর, হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার পাশাপাশি গত লোকসভা নির্বাচনেও সেখানে তৃণমূলের কেউ জয়ী হতে পারেননি। তাই রাজনৈতিক কারণেই শাসকদল চাঁচল পুরসভা গঠনে পদক্ষেপ করছে না।
চাঁচলের কংগ্রেস বিধায়ক আসিফ মেহবুব বলেন, ‘‘জনসংখ্যার নিরিখে চাঁচলে পুরসভা হওয়া খুব জরুরি। একাধিক বার বিধানসভায় সরব হয়েও ফল হচ্ছে না।’’ বিজেপি নেতা দীপঙ্কর রাম বলেন, ‘‘দু’বার ঘোষণার পরেও পুরসভা চালু না হওয়ায় আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনেই রয়ে গিয়েছি। এ জন্য শাসকদলই দায়ী।’’
চাঁচল ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা চাঁচলের জন্য কিছুই করেননি। ঘোষণা যখন করা হয়েছে পুরসভা অবশ্যই হবে।’’