ছবি: সংগৃহীত
পুর-প্রশাসক তিন জন।
অভিযোগ, তাতেও ঝকঝকে শহরের গরিমা ক্রমে ফিকে হচ্ছে বালুরঘাটে। নিয়মিত জঞ্জাল বা নিকাশি নালা সাফাই হয় না। শহরজুড়ে ভাঙা রাস্তা ভরেছে গর্তে।
শহরবাসীর একাংশের নালিশ, কলেজ মোড়, ডাকবাংলোপাড়া, ত্রিধারা ক্লাব এলাকা থেকে অগ্নিশিখা, যুব সঙ্ঘ, নামাবঙ্গি, মাস্টারপাড়ার মতো একাধিক এলাকায় এক পশলা বৃষ্টিতে জল জমে। শহরের প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেট এলাকার ডানলপ মোড়ে রাস্তার জমা জল দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। নেপালিপাড়া এলাকায় জঞ্জাল জমার অভিযোগও উঠেছে।
পুরভোটের মুখে শহরের নাগরিক পরিষেবার বেহাল দশার অভিযোগ তুলে বিরোধীরাও সরব হয়েছে। তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্যতম পুরপ্রশাসক শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, রাস্তা ও নিকাশি নালা সংস্কারের কাজে টেন্ডার করে বরাত দেওয়া হয়েছে। ওই কাজে গতি আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুর-এগজিকিউটভ অফিসার অতনু মণ্ডল।
কিন্তু বিরোধী বিজেপির অভিযোগ, সম্প্রতি ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে বালুরঘাট পুরসভা চলছে প্রশাসক দিয়ে। বিজেপির টাউন সভাপতি সুমন বর্মনের অভিযোগ, ‘‘এত দিন কি পুরকর্তৃপক্ষ ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন?’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘বালুরঘাট পুরসভায় তিন-তিন জন প্রশাসক থাকা সত্ত্বেও কেন কাজের গতি নেই, নাগরিকরা কেন সুষ্ঠু পরিষেবা পান না, তার উত্তর আগামী পুরভোটে শাসক দল পেয়ে যাবে।’’
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভা বোর্ডের মেয়াদ ২০১৮ সালের অক্টোবরে শেষ হওয়ার পরে সদর মহকুমাশাসককে প্রশাসক করা হয়। তার পর থেকে রাস্তা মেরামতি থেকে নিকাশি নালা ও জঞ্জাল সাফাইয়ের মতো নাগরিক পরিষেবার কাজের গতি কমতে থাকে বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসীর একাংশের বক্তব্য, বোর্ড থেকে জনপ্রতিনিধিরা সরে গেলে শাসকদলের তরফে প্রতিটি ওয়ার্ডে সাফাই ও নিকাশির কাজ দেখভালের জন্য ওয়ার্ড কমিটির সভাপতিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কাজ ঠিকমত হয়নি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, রাস্তা ভেঙে আরও বেহাল হয়েছে। নিকাশি জঞ্জালে ভরেছে।
বাসিন্দাদের ক্ষোভ আঁচ করেছেন তৃণমূল নেতৃ্ত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, কাজে গতি আনতে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে রাজ্য পুর দফতর তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীকে পুরসভার প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করে। তার পরেও কেটে গিয়েছে প্রায় সাত মাস।
শহরবাসীর একাংশের বক্তব্য, এক সময় রাজ্যের মধ্যে পরিচ্ছন্নতায় বালুরঘাট পুরসভা সেরার তালিকায় ছিল। ফি-বছর শিরোপাও পেয়েছিল। সেই গরিমা ফিরে পাওয়ার সুযোগ ও পরিকাঠামোগত সুবিধা পেয়েও পুরভোটের মুখে বিরোধীদের সমালোচনা শুনতে হচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষকে।