ডেঙ্গি নিয়ে কাটছে না দুশ্চিন্তা

আলিপুরদুয়ার জেলা ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা বলেই পরিচিত। গত বছর বাদ দিলে প্রায় প্রতি বছরই এই জেলায় মশা বাহিত এই দুই রোগের প্রকোপ দেখা দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩২
Share:

ডেঙ্গি নিয়ে দুশ্চিন্তায় বীরপাড়া ও মাদারিহাট।

ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বীরপাড়া ও মাদারিহাটে দুশ্চিন্তা কেটেও কাটছে না। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কথায়, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে একের পর এক ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে ডেঙ্গির ক্ষেত্রে এই মুহুর্তের আবহাওয়া যথেষ্ট অনুকুল থাকলেও. তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জেলা ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা বলেই পরিচিত। গত বছর বাদ দিলে প্রায় প্রতি বছরই এই জেলায় মশা বাহিত এই দুই রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। যার জেরে কয়েক বছর আগে প্রচুর মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে আভিযোগ। তারপরও অবশ্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই গত বছর জেলায় ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয় বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। সেই অনুযায়ী এ বারও আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। কিন্তু অভিযোগ, তারপরও মাস কয়েক আগে আচমকাই ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁতে ডেঙ্গির প্রকপ ছড়িয়ে পড়ে।

জয়গাঁয় ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা ভুটানের ফুন্টশিলিং-কেই দায়ি করেন। তাদের কথায়, সীমান্ত লাগোয়া প্রতিবেশী দেশের সেই শহরে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গি সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসে। তবে পরবর্তীতে জয়গাঁতে জল জমিয়ে রাখার প্রবনতাও যে ডেঙ্গি ছড়ানোর অন্যতম কারণ, তা বুঝতে পারেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ফলে প্রতি সপ্তাহে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জমা জল নষ্ট করার কর্মসূচি নেন তাঁরা। যে কর্মসূচি এখনও জারি রয়েছে।

Advertisement

জয়গাঁর ভয় যেমন এখনও যায়নি, তেমনই চা বাগান নিয়েও ভয় কমছে না। এই পরিস্থিতিতে সব দিকে কড়া নজর রাখার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যও আশা করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জয়গাঁয় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যু হলেও জল নষ্টের কর্মসূচির জেরে এই মুহুর্তে সেখানে ডেঙ্গি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু জয়গাঁয় ডেঙ্গি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই বীরপাড়া-মাদারিহাটের চা বলয়ে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়ানোয় চিন্তায় সেখানকার বাসিন্দারা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সেখানে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশোতে পৌঁছে গিয়েছে। সরকারি হিসাবে মত্যুর সংখ্যা এক।

তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কথায়, বর্তমান আবহাওয়া ডেঙ্গি ছড়ানোর পক্ষে খুবই অনুকুল। সে জন্য দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জায়গাতেও ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েই চলছে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে টানা নানা পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে আলিপুরদুয়ারে সেই প্রকোপ একেবারেই কম। জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের কথায়, সেজন্যই বীরপাড়া-মাদারিহাটের চা বলয়ে দুই সপ্তাহ আগেও যেখানে প্রতিদিন দশ-বারোজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছিল, সেখানে এই মুহুর্তে সেই সংখ্যাটা তিন-চারে নেমে এসেছে। আলিপুরদুয়ারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘জেলায় এই মুহুর্তে ডেঙ্গি পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে তার মানে এটা নয় যে আমরা আত্মতুষ্টিতে রয়েছি। বরং জেলার স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রত্যেকেই ডেঙ্গি নিয়ে সতর্ক রয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement