দাবি: থানায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
রবিবার সন্ধের সংঘর্ষের ঘটনায় সোমবারও তেতে থাকল এলাকা। এ দিন যুব তৃণমূলের কর্মীরা জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় গিয়ে ওই ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তৃণমূল নেতা ও বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির দাবি তুলে ডিএসপির হাতে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
অন্যদিকে, কৃষ্ণ দাসের ঘনিষ্ঠরা পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে, সরাসরি যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের নামে দলের সম্মান নষ্ট করার অভিযোগ আনলেন। দল সূত্রের খবর, এ দিন সকালেই জেলা নেতৃত্ব বিষয়টি মিটমাট করতে হস্তক্ষেপ করে। তাতে ফল হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার সন্ধেয়। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোমস্তপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তৃণমূলের এক প্রকাশ্য সভাকে ঘিরে দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় কর্মীদের একাংশ জানান, জেলা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস এবং যুব তৃণমূল নেতা লুতফর রহমানের অনুগামীদের সংঘর্ষ হয়েছিল। দুই নেতাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষে আহত হয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চারজন ভর্তি আছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এছাড়াও পাহাড়পুর যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি লুতফর রহমানকে জলপাইগুড়ির বাবুপাড়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
সোমবার পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা রাউত, উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার ও অন্য পঞ্চায়েত সদস্যরা সাংবাদিক বৈঠক করে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বেণুরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ইন্ধনে লুতফর রহমানেরা দলের সম্মান নষ্ট করতে পথে নেমেছেন।’’ এর পাল্টা হিসেবে কৃষ্ণ দাস -সহ বেশ কয়েকজনের গ্রেফতারের দাবিতে ধিক্কার মিছিলের ডাক দেয় যুব তৃণমূল। সূত্রের খবর, পুরো ঘটনা জানতে পেরে দলের উপরমহল থেকে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপরে যুব তৃণমূল ধিক্কার মিছিল স্থগিত বলে ঘোষণা করে। বিকেলে দেখা যায় ব্যানার, পতাকা ছাড়াই মিছিল হয়েছে। নাগরিক কমিটি নাম দিয়ে যুব তৃণমূল কর্মীরা কোতোয়ালি থানায় এসে স্মারকলিপি দেয়।
এ দিন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে কৃষ্ণ দাস এলাকা দখলের অভিযানে নেমেছে। ব্যক্তি কৃষ্ণ দাস নয়, আমার লড়াই তাঁর এই কাজের বিরুদ্ধে। অবিলম্বে এই বিষয়ে দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপ জরুরি।’’ যদিও কৃষ্ণ দাসের দাবি, “কখনও কোনওদিন দল বিরোধী কাজ করিনি।”
বিব্রত জেলা নেতৃত্বও। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সৈকত চট্টোপাধ্যায় ও কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে আলোচনায় বসে সব মিটিয়ে ফেলা হবে।’’