ব্যাঙ্কে টাকা না পেয়ে রতুয়ার ভাদো এলাকায় অবরোধ। — নিজস্ব চিত্র
ব্যাঙ্কে টাকার সমস্যায় মানুষের ভোগান্তি অব্যাহত মালদহে। টাকা না পেয়ে বৃহস্পতিবার রতুয়ার বালুপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভাঙচুর করা হয়েছিল। শুক্রবারও ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা না মেলায় প্রথমে ব্যাঙ্ক ও পরে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে গ্রাহকদের বিক্ষোভে তেতে উঠল রতুয়ারই ভাদো এলাকা।
এ দিন বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের ভাদো শাখায় সকাল থেকে লাইন দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক খুলতেই গ্রাহকরা জানতে পারেন যে টাকা নেই। লাগোয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কিয়স্ক থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয় যে দুশো টাকার বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। এরপরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। ব্যাঙ্কে বিক্ষোভের পর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের জেরে চাঁচল থেকে রতুয়া হয়ে মালদহগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নাজেহাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় রতুয়ার ওসি হারাধন দেবকে নিয়ে এলাকায় ছুটে যান রতুয়া ১ ব্লকের বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। তাদের চেষ্টায় তিন ঘণ্টা বাদে অবরোধ উঠলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। টাকার আকালেই যে ওই গ্রামীণ ব্যাঙ্কের একাধিক শাখায় যে সমস্যা চলছে তা অস্বীকার করেননি কর্তৃপক্ষ। বিডিও বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। যাতে সমস্যা মেটে তা দেখতে বলা হয়েছে।’’
গ্রাহকদের অভিযোগ, ব্যাঙ্কে দীর্ঘক্ষণ লাইন দেওয়ার পর কখনও পাঁচশো, এক হাজার টাকা মেলে। কোনওদিন তাও মেলে না। বৃহস্পতিবারও টাকা মেলেনি। তাই এ দিনও টাকা মিলবে না জেনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মানুষ। বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলায় তাদের মোট ৬০টি শাখা রয়েছে। ব্যাঙ্ক চালাতে সপ্তাহে ছ’কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। অথচ এখন সপ্তাহে বড়জোর দেড় কোটি টাকা মিলছে। তাছাড়া আগে ব্যাঙ্কে টাকা জমাও হত। কিন্তু এখন শুধুই তোলা হচ্ছে। পাঁচশো-এক হাজার টাকার যে নোট জমা হচ্ছে তা অচল। এই অবস্থায় ব্যাঙ্কের নাভিশ্বাস উঠেছে।
বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের মালদহের রিজিওনাল ম্যানেজার সব্যসাচী মজুমদার বলেন, ‘‘কী করব, প্রয়োজনীয় টাকা না মেলায় আমাদেরও অসহায় অবস্থা।’’ একই রকম অসহায় অবস্থা হায়াত আলি, জাহির আলমদের মতো চাষিদেরও। এ দিনও ভাদো শাখায় টাকা না পেয়ে দুই চাষিই বলেন, ‘‘জমি পতিত পড়ে রয়েছে। ব্যাঙ্কে টাকা রয়েছে। অথচ টাকার অভাবে চাষ করতে পারছি না। আমাদের কী হবে।’’