মিষ্টিমুখ: পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ খাওয়াচ্ছেন রসগোল্লা। নিজস্ব চিত্র
এক দিকে রসগোল্লা বিলি, অন্য দিকে ডায়াবেটিস বা মধুমেহ রুখতে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ। একই দিনে কোচবিহারের শহরের দুই প্রান্তে এমনই দুই কর্মসূচি হল। বৃহস্পতিবার কোচবিহার শহরের রাসমেলা চত্বর লাগোয়া এলাকায় মিষ্টি ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে রসগোল্লা দিবস উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়। আবার এ দিনই শহরের সাগরদিঘি লাগোয়া এলাকায় মধুমেহ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে পদযাত্রা, আলোচনা সভার কর্মসূচি হয়। দু’টি কর্মসূচি ঘিরেই উৎসাহীদের ভাল ভিড়ও হয়েছিল। রসগোল্লা প্রেমীদের অনেকে মধুমেহ রোগের জেরে সুগার ফ্রি রসগোল্লার খোঁজও করেন। তবে এ দিন কোচবিহারে সে ভাবে সুগার ফ্রি রসগোল্লা মেলেনি বলে তাঁদের কয়েক জন জানান। অবশ্য এমন পরিস্থিতিতে চড়া মিষ্টি ভরা রসগোল্লার স্বাদও নিয়েছেন উৎসাহীরা অনেকে।
মিষ্টি ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রসগোল্লার ‘জন্মদিন’ উদ্যাপনও করা হয়। সেখানে কেক কাটেন পুরসভার পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক, সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা, জেলা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিলীপ বণিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রসগোল্লার উপকারিতা নিয়েও ব্যবসায়ীদের তরফে বক্তব্য রাখেন সমিতির কর্তারা। অনুষ্ঠানের পরেই রসগোল্লা বিলি শুরু হয়। লাইন সামলাতে হিমসিম খেতে হয় উদ্যোক্তাদের। ব্যবসায়ী বাপ্পা বণিক বলেন, “বাংলার রসগোল্লার জিআই প্রাপ্তির দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তির দিন হিসেবেই এ দিন রসগোল্লা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। কোচবিহার শহরের অনুষ্ঠান থেকেই বিনা মূল্যে ১০ হাজারের বেশি রসগোল্লা বিলি করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, জেলা জুড়ে সমিতির উদ্যোগে ৫০ হাজার রসগোল্লা বিলি হয়। ছানার সমস্যা না হলে আরও ৩০ হাজার রসগোল্লা বিলি করা হত। কোচবিহারের পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ বলেন, “মধুমেহ রয়েছে। তবু রসগোল্লা খেয়েছি।”
মধুমেহ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংস্থার তরফে শহিদ বাগে আলোচনা সভা হয়। উদ্যোক্তারা জানান, ইনসুলিনের আবিস্কারকের জন্মদিনটিকেই বিশ্ব ডায়াবিটিস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। চিকিৎসকরাও আলোচনায় অংশ নেন। দৈনন্দিন জীবন যাপনে ‘খাবারের ব্যালান্স’ রাখার কথাও আলোচনায় উঠে আসে। শিশুদের ব্যাপারেও সতর্কতার কথা বক্তারা সেখানে তুলে ধরেন। পরিবারের সদস্য ডায়াবিটিস আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যদেরও সজাগ থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়। শরীর চর্চা, নিয়মিত হাঁটা, পরিমিত ঘুম, বিশ্রামের গুরুত্বও বক্তারা তুলে ধরেছেন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য রাজা বৈদ্য জানান, ‘‘ভাল সাড়া মিলেছে। মানুষ আরও বেশি করে সচেতন হবে বলেই আশা করছি।’’ এক প্রবীণ বলেন, “সুগার ফ্রি রসগোল্লা পাইনি। ডায়াবেটিস দিবস বলে রসগোল্লা খাওয়ার লোভ সামলেছি। এমন দিনে অভ্যাস ভাঙা যায় না।”