বাতিল নোটের টোপে দেদার বাজি চলছে উপনির্বাচন নিয়ে

মঙ্গলবার সকাল থেকে খোলা হচ্ছে কোচবিহার উপনির্বাচনের ইভিএম। বাজির বাজারে কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হয়েছে আঁচ পোহানোর পালা। নোট বাতিলের ঠেলায় এ বার বাজির বাজার অন্যবারের মতো তাতেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৯
Share:

চলছে ভোট গণনার প্রস্তুতি। — নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার সকাল থেকে খোলা হচ্ছে কোচবিহার উপনির্বাচনের ইভিএম। বাজির বাজারে কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হয়েছে আঁচ পোহানোর পালা। নোট বাতিলের ঠেলায় এ বার বাজির বাজার অন্যবারের মতো তাতেনি। মেনে নিচ্ছেন কারবারিরা। তাই বাতিল নোটেই বাজি ধরুন-এই টোপ দিয়েই বাজিমাত করতে চাইছেন তারা।

Advertisement

কারবারিদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, চক্রে জড়িত অনেকেই হারের টাকা ‘বাতিল’ নোটে মেটানোর টোপ দিচ্ছেন। জিতলেও অবশ্য বাতিল নোটেই অর্ধেক পাওনা নিতে হবে। জয়ের দৌড়ে তৃণমূলকে এক নম্বরে রেখেই দর দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে তৃণমূল কত ভোটের ব্যবধানে জিতবে সেই প্রশ্নেও জমজমাট বাজির বাজার।

কারবার চক্রে জড়িত এক ব্যক্তি বলেন, “লোকের হাতে টাকা নেই। তাই বাজি হারলে পুরনো নোটে টাকা মেটানোর আশ্বাস দিতে হচ্ছে। তারপরেও আগে যারা দশ হাজার টাকা বাজি ধরতেন তাদের অনেকে অর্ধেকের কম টাকা লাগাচ্ছেন।” আর ‘দর’ দাতাদের একজনের দাবি, ‘‘হারলে পুরনো টাকার ওপর দিয়ে চলে যাবে। জিতলে কিছুটাতো নতুন আসবে।’’ কারবারিরা বলছেন, ‘‘৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাঙ্কে পুরনো নোট জমা দেওয়া যাবে। তাই কারবারে ঝুঁকি নিচ্ছি।’’

Advertisement

বিভিন্ন জুয়া চক্রের সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবরের মতো এ বারও যে দলের জেতার সম্ভাবনা বেশি তার দর টাকার অঙ্কে কম। যাদের জেতার সম্ভাবনা কম তাদের ক্ষেত্রে কারবারিরা বেশি দর দিয়ে থাকেন। কারণ প্রায় অনিশ্চিত সম্ভাবনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে রাজি হন না অনেকেই। সেই হিসেবে তৃণমূলের জিতলে দর দেওয়া হচ্ছে একশো টাকায় দেড়শো টাকা পর্যন্ত। বিজেপির ক্ষেত্রে দর চলছে একশোয় সাতশো টাকা। বাম, কংগ্রেসের ক্ষেত্রে দর বারোশো টাকা থেকে পনেরোশো টাকা পর্যন্ত। এখানে লক্ষ্যনীয়, বাম কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দু’নম্বরে উঠে এসেছে নরেন্দ্র মোদীর দল।

ফাটকা চলছে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান নিয়েও। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের দেড় লক্ষের বেশি ব্যবধানে জিতবে এমন বাজিতে একশো টাকায় দেড়শো টাকা দর দেওয়া হচ্ছে। সাড়ে তিন থেকে পাঁচ লক্ষাধিক ব্যবধান হলে মিলবে একশো টাকায় তিনশো টাকা পর্যন্ত। ব্যক্তিগত পরিচয়ের নিরিখে মোবাইল ফোন থেকেও ‘বুকি’রা ওই দর নিচ্ছেন। তবে পুলিশের এক কর্তা জানান, এধরনের কাজ বেআইনি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজনৈতিক নেতারা অবশ্য ‘বেটিং’ কে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কে কোথায় বাজি ধরছেন জানি না। আমরা কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে ব্যস্ত।” বিজেপির জেলা সভাপতি নিখিল রঞ্জন দের কথায়, “বেটিং, জুয়া কোনটাই আমরা সমর্থন করি না। তবে এটা ঠিক আগামী দিনে বিকল্প শক্তি হিসেবে বিজেপি উঠে আসছে সেটা মানুষ বুঝছেন। তার প্রভাবই হয়তো পড়ছে।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “এ সব আমরা গুরুত্ব দিই না। যা ভোট হয়েছে তাতে মানুষের প্রকৃত রায় ফলাফলে প্রতিফলিত নাও হতে পারে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement