NRC

কাটেনি এনআরসি আতঙ্ক, সই করে চলেছেন বিধায়ক

মানুষের আবদারে দিনভর কয়েকশো সই করে চলেছেন ইশা। এদিন মাসুমার আর্জিতে নেমে গাড়ির বনেটের উপরেই আধার সংশোধনের আবেদনপত্রে সই করে দেন ইশা। গাড়ি থেকে বিধায়কের স্টাম্প বের করে ছাপও লাগিয়ে দিলেন।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

সুজাপুর শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৪১
Share:

গাড়ির বনেটে রেখে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করে নিজেই স্ট্যাম্প দিচ্ছেন বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র।

বৃহস্পতিবার বেলা বারোটা। সুজাপুর হাসপাতালে পেছনে গফফর মুন্সিপাড়ার মহিলা পরিচালিত একটি বেসরকারি সংস্থার অনুষ্ঠানে কম্বল বিলি করছিলেন সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী। খবর পেয়ে উনুনে চাপানো পাঁচমিশেলী তরকারি আধ সেদ্ধ অবস্থায় ফেলে রেখে স্বামী সরিফুল হকের সঙ্গে সাইকেলে চেপে পড়িমরি করে তিন কিলোমিটার দূরের এই অনুষ্ঠানস্থলে আসছিলেন বাখরপুরের বধূ মাসুমাবিবি। কিন্তু তাঁরা আসার আগেই অনুষ্ঠান সেরে জালালপুর যাচ্ছিলেন ইশা। সুজাপুর হাসপাতালের কাছে সাইকেল থেকে এক লাফে নেমে একেবারে ইশার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন মাসুমা। হাতে দুটি কাগজ। গাড়ির জানালার কাছে গিয়ে ইশার উদ্দেশ্যে মাসুমার আর্জি, ‘‘দাদা একটা সই লাগবে।’’

Advertisement

জানা গেল, আধার কার্ড সংশোধনের জন্য সই চাই মাসুমার। শুধু এই সুজাপুরই নয়, যেখানেই ইশা যাচ্ছেন, তা গ্রামে জনসংযোগেই হোক বা চায়ের আড্ডা, সেখানেই আধার সংশোধনের ফর্মে সই নিচ্ছেন বাসিন্দারা।

নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি জুজু এভাবেই তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে সুজাপুর থেকে কালিয়াচকের বাসিন্দাদের। তাই, মানুষের আবদারে দিনভর কয়েকশো সই করে চলেছেন ইশা। এদিন মাসুমার আর্জিতে নেমে গাড়ির বনেটের উপরেই আধার সংশোধনের আবেদনপত্রে সই করে দেন ইশা। গাড়ি থেকে বিধায়কের স্টাম্প বের করে ছাপও লাগিয়ে দিলেন।

Advertisement

শুধু এখানেই নয়, এদিন সকালে নওদা যদুপুরের কাশিমনগরে গিয়ে চারটি কবরস্থানের সীমানা প্রাচীরের কাজের যখন উদ্বোধন করেন ইশা। সেখানেও নাসেরাবিবি-সহ কয়েকজনের আধার সংশোধনের আবেদনপত্রে সই করতে হয়। বিকেলে জালালপুরে চায়ের আড্ডায় বসেও একইভাবে তাঁকে সই করতে হয়েছে। ইশা বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির জুজু দেখিয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করে রেখেছে। আর তাই মানুষ আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এখনও দিনভর ছুটে বেড়াচ্ছেন। স্বাক্ষর করাতে রোজ মানুষ আসছেন। রেহাই কবে মিলবে জানি না।’’

বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে বিরোধী দলগুলি মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।’’ জানা গিয়েছে, জেলার প্রশাসনিক ভবন চত্বর বা বিভিন্ন ব্যাঙ্কে যে আধার এনরোলমেন্ট সেন্টার রয়েছে সেখানে সংশোধনের জন্য রোজ ভিড় উপচে পড়ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement