উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।
আগামী নভেম্বরে পঞ্চাশ বছরে পা রাখছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। অথচ এখনও নানা সমস্যায় জড়িয়ে রয়েছে এই মেডিক্যাল কলেজ। গড়ে ১২০০ রোগী থাকলেও অনুমোদিত শয্যা সংখ্যা অর্ধেকের মতো। এখনও কার্ডিওলজি, নিউরোলজি, নেফ্রোলজির চিকিৎসার জন্য অন্তর্বিভাগ চালু করা যায়নি। ভাবা হলেও কোনও ‘আই ব্যাঙ্ক’ গড়ে ওঠেনি। পরিষেবা নিয়ে অনেক সময়ই অভিযোগ উঠছে। হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবও রয়েছে। এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখেই সুবর্ণজয়ন্তী পালনে উদ্যোগী কর্তৃপক্ষ।
১৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠা দিবস মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। চেষ্টা চলছে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে আনার। রবিবার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রস্তুতি নিয়ে কলেজে অধ্যক্ষ, সুপার, চিকিৎসক, ছাত্রদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করেন পর্যটনমন্ত্রী তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির মুখ্য পৃষ্ঠপোষকও তিনি। ঠিক হয়েছে ১৭ নভেম্বর বর্ণাঢ্য র্যালি বার হবে। ওই দিন থেকে সেমিনার, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
১৯৬৭ সালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সূচনা। ৪৬ জন ছাত্র এবং ছ’জন ছাত্রীকে নিয়ে পথ চলা শুরু। গোড়ায় জলপাইগুড়িতে জ্যাকসন মেডিক্যাল স্কুলে, কিছু দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও পড়াশোনা চলে। কয়েক বছর পরে বর্তমান জায়গায় পরিকাঠামো গড়া হয়। এখনও পুরো জায়গা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নামে ‘নামজারি’ হয়নি।
সুবর্ণজয়ন্তী পালনের ক্যাচ লাইনও থাকছে ‘একে একে পঞ্চাশে পা।’ এ দিন পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রাক্তনী বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা সকলেই চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী আসুন। নতুন নির্মীত ‘গোল্ডেন জুবিলি অডিটরিয়াম’-এর উদ্বোধন করবেন তিনি। ১৭ এবং ১৮ নভেম্বর দুই দিনই বিভিন্ন শিল্পীদের দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।’’
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় এবং সম্পাদক সুশান্ত কুমার রায় জানান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কানাডার মতো জায়গা থেকে অনেক প্রাক্তনীরা যোগ দিতে আসবেন সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে। ১৪ নভেম্বর থেকে কয়েকদিন বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমান পড়ুয়াদের ক্লাস করাবেন তাঁরা। বার করা হবে পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে বিশেষ ‘সুভেনিয়র’। ২০ নভেম্বর সমাপ্তি অনুষ্ঠানের পর উসাহীদের নিয়ে যাওয়া হবে বনাঞ্চলে ‘জঙ্গল সাফারি’তে। ডুয়ার্সের মূর্তি, টিলাবাড়ি, বাতাবাড়ি এলাকায় তাঁদের ঘোরানো হবে।
কর্তৃপক্ষ জানান, শয্যা সংখ্যা বাড়ানো থেকে ক্যাম্পাস সাফসুতো রাখার বিভিন্ন প্রক্রিয়াই চলছে। ক্যাম্পাসে সুপার স্পেশালিটি ব্লক গড়ে তোলা হচ্ছে। তা চালু হলে আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে।