জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে রোগীরা। সোমবার। ছবি: সন্দীপ পাল
যে বেডে থাকার কথা একজনের, তার কোনটিতে রয়েছেন তিনজন, তো কোনটিতে আবার চারজন৷ জ্বরের রোগী ক্রমশ বাড়তে থাকায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের অবস্থা এখন এমনই৷ জ্বরের রোগী সামলাতে আউটডোরে ফিভার ক্লিনিক চালু করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ সেখানেও উপচে পড়ছে ভিড়৷ এ দিকে ডেঙ্গি নির্ধারণ নিয়ে শহরের কিছু নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে জলপাইগুড়ি পুরসভার কর্তাদের৷
জলপাইগুড়ি জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই চারশো ছাড়িয়েছে৷ সেই সঙ্গে বাড়ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যাও৷ প্রতিদিনই জেলার নানা প্রান্ত থেকে জ্বরে আক্রান্তরা জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে আসছেন৷ কিন্তু এক বেডে অন্য রোগীদের সঙ্গে গাদাগাদি করে থাকতে হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে তাদের অনেকের৷ জলপাইগুড়ি শহরের আদরপাড়ার বাসিন্দা অনীতা সরকার রবিবার জ্বর নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘বেড নেই৷ তাই আগে থেকে দু’জন রোগী ভর্তি রয়েছেন এমন বেডে আমাকে রাখা হয়েছে৷’’ ধূপগুড়ির বাসিন্দা সুমিত্রা রায় বলেন, ‘‘নার্সরা বলে দিয়েছেন, এক বেডে এ ভাবে থাকতে না পারলে ছুটি নিয়ে চলে যেতে৷ তাঁদের কিছু করার নেই৷’’
এ দিকে, এই জ্বরের প্রকোপের মধ্যেই বমি ও পেটের সমস্যা নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পার্বতী বাঁশফোর৷ তিনি আবার হাসপাতালেরই কর্মী৷ পার্বতীদেবীর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের কর্মী হওয়া সত্ত্বেও বারবার বলেও একটি সিঙ্গল বেড পাইনি৷’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ যদিও বহু সংখ্যায় জ্বরের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন সে কথা মানতে চাননি তারা৷ হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ৪৩ জনের মত জ্বরের রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন৷ কিন্তু জ্বরের পাশাপাশি অন্য অসুখের জন্যেও প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছেন৷ তাই এক বেডে একাধিক রোগী রাখতে হচ্ছে৷’’
এ দিকে ডেঙ্গি নির্ধারণ নিয়ে শহরের নার্সিংহোমগুলির একাংশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ জলপাইগুড়ি পুরসভার কর্তারা৷ পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, ‘‘এ বার থেকে নার্সিংহোমে কারও ডেঙ্গি ধরা পড়লে, তার নাম, ঠিকানা এবং কী ধরণের পরীক্ষায় ডেঙ্গি নির্ণয় হল তা বিস্তারিতভাবে পুরসভাকে জানাতে হবে৷’’