টোটোয় চেপে শহর ঘুরে দুপুরে ‘যাত্রী’রা রীতি মতো আপ্যায়ণ করে হোটেলে নিয়ে গিয়ে ভুরিভোজ করালো চালককে। বিকেলে গাড়ি দাঁড় করিয়ে শৌচাগার থেকে বেরিয়েই চালক দেখলেন টোটো হাওয়া। ‘যাত্রী’রাও অদৃশ্য।
বুধবার দিনহাটা শহরে ওই ঘটনার পর তিন দিন কেটে গিয়েছে। পুলিশে অভিযোগ করা হলেও এখনও টোটো উদ্ধার হয়নি। এ দিকে টোটো খুইয়ে কর্মহীন হয়ে পড়ায় কী ভাবে সংসার চালাবেন জানেন না দিনহাটার পানাগুড়ি এলাকার বাসিন্দা চালক আমিনুর মিয়াঁ। দ্রুত উদ্ধারের দাবি তুলে সরব হয়েছে টোটো চালক সংগঠনের নেতৃত্ব।
দিনহাটার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কুন্তল বন্দোপাধ্যায় বলেন, “তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ক্লু-ও হাতে এসেছে।”
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে চৌপথি এলাকায় নিজেদের যাত্রী পরিচয় দিয়ে তিন যুবক তাঁর টোটোয় চাপেন। প্রথমে মিনিবাস স্ট্যান্ডে কাজ রয়েছে বলে সেখানে ওই টোটো নিয়ে যান। পরে শহর ও লাগোয়া এলাকায় কিছু ক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন। দুপুরে যাত্রীরা তাঁদের সঙ্গেই ওই চালককে ভাত খেতে জোর করেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির জেরে আমিনুর রাজি হন। হোটেলে ডাল, সব্জি, মাছের ঝোল দিয়ে পেট পুরে ভাত খান। বিকেলে সংহতি ময়দানে টোটো রেখে আমিনুর শৌচাগারে যেতে গেলে যাত্রী সেজে থাকা যুবকেরা জানান, তাঁদের মোবাইলের ব্যাটারি বদলাতে হবে। তাই তাঁদের মধ্যে এক যুবক মোবাইল নিয়ে তাঁর সঙ্গে যান। শৌচাগার থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে আমিনুর দেখেন ওই যুবক উধাও। ফিরে এসে দেখেন টোটো-সহ বাকিরাও নেই।
কান্নায় ভেঙে পড়ে আমিনুর বলেন, “টোটো ছিল উপার্জনের ভরসা। মাথা কাজ করছে না। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে সংসার কী করে চালাব জানি না।”
দিনহাটা প্রোগ্রেসিভ টোটো শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারাও দ্রুত ঘটনার কিনারার পাশাপাশি টোটো উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। ওই কমিটির উপদেষ্টা বিশু ধর বলেন, “এমন ভাবে দিনহাটায় এর আগে টোটো গায়েব হয়নি। দ্রুত কিনারা না হলে আন্দোলনে নামব।” ইউনিয়নের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “যাত্রী সেজে এমন কাণ্ড! পুলিশ গাড়ি উদ্ধার করুক।”