—ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসছেন আগামী সপ্তাহে। তার আগে তৃণমূলের এক বিধায়ক দলেরই ভোটকুশলী পিকে-কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে ‘বসে যাওয়ার’ হুমকি দিলেন। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া তাঁর এই মন্তব্য ও হুমকি নজিরবিহীন বলেই মনে করছে দলের একটা বড় অংশ।
এদিকে, রাতের অন্ধকারে জলপাইগুড়ি শহরে রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ ‘আমরা দাদা-র ভক্ত’ লেখা পোস্টার পড়ল। যাতে তৃণমূলের নাম-রং কিছুই নেই। একই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি ও পোস্টারও ঝোলানো হল। শুভেন্দু-র অরাজনৈতিক পোস্টার অবশ্য আগে থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে টাঙানো হয়েছিল। এ দিন শুধু ভাষা বদলেছে। কোনও পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘দেখা হবে লড়াইয়ের মাঠে’, কোনওটাতে ‘তোমার ভাবনায় বাংলা।’ এরই মাঝে শুভেন্দু-অনুগামী জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের যুগ্ম সম্পাদক বুবাই করের হোয়াট্সঅ্যাপ ‘ডিপি’ বদলে ‘ওঁ’ ছবি দেওয়া নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় তৃণমূলের অন্দরে এই মুহূর্তে একটা ‘বিদ্রোহে’র আবহাওয়া।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী অবশ্য কোনও কিছুকেই আমল দিতে রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, “দলের সংগঠন জেলায় যথেষ্ট শক্ত। তাতে কেউ আঘাত করতে পারবেন না।”
কিন্তু ময়নাগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী হুমকি দেওয়ার পরেও তাঁর অবস্থান থেকে সরেননি। উল্টে পিকে-কেই ‘বহিরাগত’ বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাঙালিরা ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের তাড়িয়েছে৷ সেই বাঙালিকে পিকে রাজনীতি শেখাবে? আমি বহিরাগত পিকে-র উপদেশ শুনব না, প্রয়োজনে আমি আমি বসে যাব।’’
‘বহিরাগত’ প্রসঙ্গ নিয়ে এমনিতেই বঙ্গ রাজনীতিতে তরজা চলছে। সেই সময়ে তৃণমূলের অন্দরেই এহেন অভিযোগ উঠল শীর্ষ নেতৃত্বের ঠিক করা খোদ ভোটকুশলীর বিরুদ্ধেই। ময়নাগুড়ির বিধায়কের দাবি, কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গোটা দল একসঙ্গে রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সে সব না করে পিকে দলে বিভাজন করছে। পিকের জন্য সাংগঠনিক ক্ষতি হচ্ছে।’’ এর আগেও অনন্তদেব জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এ বার তাঁর অভিযোগ, ‘‘পিকের টিমের অজুহাত দিয়ে জেলায় দল চলছে। পিকে-র টিমের ছেলেরা আনাড়ি। সব ভাড়া করা লোকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে। দলের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, মূলত ময়নাগুড়ি ব্লক ভাগ করা নিয়েই পিকের ওপর রাগ বিধায়কের। তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন বলে খবর। তাঁর কথায়, ‘‘সরাসরি তো মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে পারেনি, ওএসডি-র হাতে দিয়েছি। এখনও উত্তর পাইনি।’’
এ দিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার কে লাগিয়েছে তার কোনও হদিশ এ দিন পর্যন্ত তৃণমূল কর্মীরা পাননি বলে দাবি করেছেন।