নেশা: প্যারাগ্লাইডিংয়েও সঙ্গী নিজস্বী। ছবি: সন্দীপ পাল
আকাশ থেকে হাওয়ায় ভেসে নেমে আসছিলেন তৃপ্তি সিংহ, রসিদা আলিরা। তার আগে অন্তত ২০ মিনিট পাহাড়ের মাথায় মেঘের দেশে উড়ছিলেন তাঁরা। ‘‘নেমে এসে যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না। স্বপ্নের মতো লাগছিল’’, বললেন তৃপ্তি সিংহ।
প্যারাস্যুটের মতো ‘ক্যানোপি’-র সাহয্যে প্যারাগ্লাইডিং। কালিম্পঙের ডেলোর এই প্যারাগ্লাইডিং দেশ বিদেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয় পাইলট রয়েছেনই, তাঁদের সঙ্গে নেপাল, মানালি, হিমাচল থেকে এসেও অনেকে প্যারা গ্লাইডিং করাচ্ছেন পর্যটকদের। উরগেন শেরপা, বিষ্ণু তিমিল সিংহদের মতো অন্তত ১৮-২০ জন রয়েছেন। এক জন গাইড বা পাইলট এক একজন পর্যটককে নিয়ে প্যারাগ্লাইডিং করান।
ডেলোর উঁচু পাহাড় থেকে প্যারাস্যুট নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন পর্যটকরা। আকাশে ভেসে বেড়িয়ে গ্রাহামস হোম গ্রাউন্ডে নিরাপদে নেমে আসে সেই প্যারাস্যুট। সবটাই একজন গাইড নিয়ন্ত্রণ করেন। গাইডের শরীরে সঙ্গে বাঁধা থাকে ‘হারনেস’ যা মূলত বিশেষ বসার ব্যবস্থা করা বেল্ট। তা নিজেদের শরীরের সঙ্গে বেঁধে নেন উৎসাহীরা। এর সঙ্গে বিশেষ দড়ি বা ‘লাইন’-এর সঙ্গে বাঁধা থাকে ক্যানোপি। শূন্যে ভেসে থাকার সময় বাতাসে ফুলে ওঠা ক্যানোপি ভাসতে সাহায্য করে।
মুম্বইয়ের বাসিন্দা ব্যবসায়ী দম্পতি তৃপ্তি দেবী এবং সত্যজিৎ সিংহ কালিম্পঙে এসে প্যারা গ্লাইডিংয়ের আকর্ষণ এড়াতে পারেননি। তৃপ্তিদেবী বলেন, ‘‘দারুণ অভিজ্ঞতা। এবারই প্রথম প্যারা গ্লাইডিং করলাম।’’ নেমে এসেও ঘোর কাটেনি তাঁর। দেখছেন আকাশে তখনও ভেসে থেকে প্যারা গ্লাইডিং করছেন অনেকে। গাইড ডেমিয়াম রুমচেল, বিষ্ণু তিমিল সিংহরা জানান, যারা বিষয়টি জানেন না, সেই পর্যটকদের ল্যাপটপে পুরো বিষয়টি দেখান গাইডরা। তাঁরা বলেন, ‘‘অনেকে প্রথমে ভয় পান। কিন্তু তাতে উৎসাহ কমে না।’’ ইনদওরের বাসিন্দা রসিদা আলি জানান, এর আগে মানালিতে তিনি প্যারাগ্লাইডিং করেছেন। তবে সেখানে সামান্য উঁচুতে ওড়ানো হয়। এখানে অনেকটা উচুঁ। অনেক বেশি আকর্ষণীয়, রোমাঞ্চকর।
গাইডরা জানান, ১৬০০ মিটার উচ্চতা থেকে তারা প্যারাগ্লাইডিং করাচ্ছেন। সেখান থেকে ২০০, ৩০০ মিটার উঁচু পর্যন্ত ওঠা হয়। ভাড়া মাথা পিছু ৩ হাজার টাকা। গোটা অভিজ্ঞতা ভিডিও রেকর্ডিং করতে হলে খসাতে হবে আরও ৫০০ টাকা। প্যারাগ্লাইডিং করার সময় সেলফি স্টিকে নিজস্বী তোলাও এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা বলে জানালেন রসিদা। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও অনেকে চিন্তিত। গাইডদের প্রশিক্ষণ, দক্ষতার বিষয়টি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকলে ভাল হয় বলে দাবি পর্যটকদের।