কার্শিয়াঙে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভায় অনীত থাপা৷ নিজস্ব চিত্র
‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) এবং দার্জিলিং পুরসভা দখলের পরে, পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে পুরোদমে নেমে পড়ল পাহাড়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। মঙ্গলবার কার্শিয়াঙে এক কর্মিসভায় প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে ময়দানে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। দল সূত্রের দাবি, এপ্রিলে পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা এবং মে মাসে ভোট সম্পন্ন হতে পারে বলে বৈঠকে দাবি করা হয়। সে হিসাবে দলের একেবারে নীচের স্তর এবং গ্রাম থেকে বাছাই করা নেতা-নেত্রীকেই টিকিট দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন অনীত।
পাহাড়ে দু’দশক পরে, পঞ্চায়েতি-রাজ স্থাপন নিয়ে প্রচারের কথাও দলীয় বৈঠক বলেছেন জিটিএ প্রধান৷ বাকি দলগুলির চেয়ে প্রচার ও প্রার্থী নির্বাচনে এগিয়ে থাকার বার্তাও দিয়েছেন। অনীত বলেছেন, ‘‘দুই দশকের বেশি সময় পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। সামান্য শংসাপত্র, স্বাক্ষরের জন্য মানুষকে ঘুরতে হয়। ভোগান্তি গ্রামীণ এলাকায় বেশি। আমরা পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলাম। তা কার্যকর করা হবে।’’
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সরকারি তরফে এ পর্যন্ত উচ্চবাচ্য নেই। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করলেও, গোর্খা জনমু্ক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ, বিজেপির মতো দলগুলি এখনও সে কাজ শুরু করেনি। তুলনায় হামরো পার্টি কিছুটা সক্রিয়। দলের তরফে বিভিন্ন এলাকায় কর্মিসভা, মিটিং শুরু হয়েছে। দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিততে পারলে, পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণের অনেকটাই হাতে চলে আসতে পারে আঁচ করেই অনীত দলের সবাইকে ‘মিশন পঞ্চায়েত’ লক্ষ্য স্থির করে ময়দানে নেমে পড়তে বলেছেন। সমতলের মতোই প্রথমে বুথ স্তরে সংগঠন গোছানোর কথা বলা হয়েছে। বুথ স্তরে নেতা-নেত্রী, শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব এবং গ্রামের মানুষের মত নিয়ে প্রার্থী করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। অনীত বলেছেন, ‘‘সুপারিশ নয়। নেতা হলেই টিকিট মিলবে, এমন নয়। কাজের লোক না হলে, টিকিট দেব না।’’
২০০০ সালের জুনে শেষ বার পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল। তখন পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন সুবাস ঘিসিং। তার পরে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হলেও, পাহাড়ে হয়নি। পুরভোট হয়েছে, জিটিএ নির্বাচন হয়েছে। প্রায় ২৩ বছর বাদে, এ বার পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। গত বছরের অগস্টেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে পাহাড়ের গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাস এবং সংরক্ষণের তালিকা তৈরির কথা বলে।