নয়ানজুলিতে গ্যাস ট্যাঙ্কার, আতঙ্ক

রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে একটি গ্যাস ভর্তি ট্যাঙ্কার! তা থেকে অনর্গল বেরিয়ে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে৷ এই ঘটনায় মঙ্গলবার রীতিমত আতঙ্ক ছড়াল জলপাইগুড়ির বৈরাগীপাড়ায়

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৭
Share:

এই ট্যাঙ্কারটিই উল্টে পড়ে নয়ানজুলিতে।ছবি: সন্দীপ পাল

রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে একটি গ্যাস ভর্তি ট্যাঙ্কার! তা থেকে অনর্গল বেরিয়ে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে৷ এই ঘটনায় মঙ্গলবার রীতিমত আতঙ্ক ছড়াল জলপাইগুড়ির বৈরাগীপাড়ায়৷

Advertisement

ঘটনার পরই জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে দমকলও ছুটে যায়৷ পৌঁছন ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে কর্তারাও৷ কিন্তু রাত পর্যন্ত ট্যাঙ্কার থেকে গ্যাস বেরিয়েছে৷ দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়৷ বাসিন্দাদেরও দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়৷ যাঁরা বাড়িতেই রয়েছেন তাদের বাড়িতে আগুন না জ্বালাতে অনুরোধ করা হয়৷ দুপুরের পর থেকে গোসালা মোড় থেকে অসম মোড় পর্যন্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়৷

রান্নার গ্যাস ভর্তি ওই ট্যাঙ্কারটি শিলিগুড়ির দিক থেকে অসম যাচ্ছিল৷ জলপাইগুড়ির বৈরাগীপাড়ায় জাতীয় সড়কে উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে ট্যাঙ্কারটির৷ রাস্তার পাশেই নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে ট্যাঙ্কারটি৷ তারপরই সেখান থেকে অনর্গল গ্যাস বের হতে শুরু করে৷ আইওসি-র আধিকারিকদের পরামর্শেই এরপর মাইকিং করে এলাকার বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেন পুলিশকর্তারা৷

Advertisement

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইন্ডিয়ান অয়েলের কেউ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, “ট্যাঙ্কারটি যে ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, তাতে বিস্ফোরণ ঘটলে প্রায় পাঁচশো মিটার জুড়ে বিপদ ঘটতে পারত৷ ট্যাঙ্কারটিতে প্রায় সাড়ে সতেরো হাজার কেজি রান্নার গ্যাস ছিল৷ তাই পুলিশ কর্তাদের অনুরোধ করেছি বাসিন্দাদের সতর্ক করতে৷” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে এসেছিলেন৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরই জাতীয় সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ বাড়তি বাহিনীও মোতায়েন করা হয়৷ পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে৷’’

তবে সমস্যা বাধে জাতীয় সড়ক নিয়ন্ত্রণেও৷ প্রথমে ওই সড়কে গোসালা মোড় থেকে অসম মোড় পর্যন্ত যান চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ তারপর শিলিগুড়িগামী গাড়িগুলিকে গোসালা মোড় থেকে জলপাইগুড়ি শান্তিপাড়া হয়ে অসম মোড় দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়৷ অন্য দিকে শিলিগুড়ি থেকে আসা গাড়িগুলিকে অসম মোড় থেকে মাসকালাইবাড়ি হয়ে গোসালা মোড় দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু এরপরও গোসালা মোড় ও অসম মোড়ে ব্যাপক যানজট হয়৷ চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা৷ পরিস্থিতি সামল দিতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকেও৷ তবে পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যতই ঘোরালো হোক না কেন, আমাদের কিছু করার নেই৷ কারণ, ট্যাঙ্কারটিতে আচমকা বিস্ফোরণ হলে প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে৷’’

স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ রায় বলেন, ‘‘সেই দুপুর বেলায় দুর্ঘটনার পরই ট্যাঙ্কারটি থেকে গ্যাস বের হতে শুরু করেছে৷ রাত পর্যন্ত একই ভাবে গ্যাস বেরোয়৷ এলাকা গ্যাসের গন্ধে ভরে গিয়েছে৷’’ তবে পুলিশ কর্তাদের আশা, রাতের মধ্যে সব গ্যাস বেরিয়ে গেলে বিপদের আশঙ্কা কেটে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement