দিদির দূত: শিলিগুড়ির একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে জেলা তৃণমূল নেত্রী পাপিয়া ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
জেলায় ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির প্রথম দিনেই বিতর্কে জড়ালেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। সোমবার ক্লাস চলাকালীন একটি স্কুলে গিয়ে সোজা ক্লাসে ঢুকে পড়েন তিনি। স্কুল চলাকালীন কেন ক্লাসে ঢুকে এ ভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রচার করা হবে তা নিয়ে, প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষামহল ও বিরোধীরা।
সোমবার বিধাননগর মুরলিগঞ্জ হাইস্কুলে দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ‘দিদির দূত’ হয়ে সেখানে গিয়েছিলেন জেলা সভানেত্রী। প্রথমে তিনি প্রধান শিক্ষকের ঘরে যান। সেখানে আলোচনার পরে ক্লাসঘরে চলে যান তিনি। সেখানে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা মিলছে কি না, তা জানতে চান। নেত্রীর সঙ্গী আর এক নেতা এক ছাত্রীকে ‘প্রশ্ন` করেন, “এই স্কুলটি বেসরকারি স্কুল, নাকি সরকারি স্কুল?”
পড়াশোনার মাঝে এ ভাবে ক্লাসরুমে নেতানেত্রীদের ঢুকতে দেখে কিছুটা হতভম্ব যায় পড়ুয়ারা। যদিও পাপিয়া দাবি করেছেন, “ক্লাসে গিয়ে কোথাও বিরক্ত করিনি। আসার সময় পড়ুয়াদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলাম। দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যদি তাদের কিছু বার্তা দেওয়ার থাকে, কিছু জানানোর থাকে সেজন্যই কথা বলা।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম বলেন, “আমার রুমে ১০-১৫ জন এসেছিলেন। বাইরে প্রায় ৫০-৬০ জন মাঠে বসেছিলেন। স্কুলের পরিকাঠামো দেখার সময়ে একটি ক্লাসে ঢুকে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন সভানেত্রী। এক ছাত্রীর থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্যাপারে খোঁজ নেন। সভানেত্রীর প্রশ্নে এক পড়ুয়া উত্তর দেয়। পরে, মাঠে কিছু ছবি তুলে তাঁরা চলে যান।”
তবে এ ভাবে স্কুল চলাকালীন ক্লাসে ঢুকে দলীয় কর্মসূচির প্রচারের বিরোধিতা করেছে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। সংগঠনের দার্জিলিং শাখার সম্পাদক বিদ্যুৎ রাজগুরু বলেন, “পড়ুয়াদের ক্লাস ব্যাহত করে এমন কর্মসূচি করা কোনও রাজনৈতিক দলের উচিত নয়। রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি, প্রধান শিক্ষকদেরও বিষয়গুলি দেখা উচিত।”
শিলিগুড়ি শিক্ষা-জেলার স্কুল পরিদর্শক রাজীব প্রামাণিক জানান, "অনেক সময় স্কুলের উন্নয়নের ব্যপারে আলোচনা হয়। তবে ক্লাস বন্ধ করে কেউ প্রকল্পের প্রচার করেছে বলে শুনিনি। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
জেলা বিজেপি সভাপতি আনন্দময় বর্মণের কটাক্ষ, “তৃণমূল নেতারা জানেন না কখন স্কুলে যাওয়া উচিত। তাঁরা নিয়ম মেনে চলেন না। যখন স্কুল চলছে, তখন এ ভাবে দলের কোনও কর্মসূচির প্রচারে ক্লাসঘরে কেন যাওয়া হবে?”