নির্বিরোধী: শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় তিন জেলার জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রী, জেলা সভাপতিদের নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর বৈঠক। ছবি: বিনোদ দাস।
ডিসেম্বরের মধ্যেই বিভিন্ন জেলায় দফতরের অসমাপ্ত ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করার আশ্বাস দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। বুধবার ‘উত্তরকন্যা’য় দলের মালদহ এবং দুই দিনাজপুরের মন্ত্রী, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের নিয়ে বৈঠক করে তাঁদের এলাকার উন্নয়ন সংক্রান্ত বকেয়া কাজ নিয়ে আলোচনা করলেন। এই আলোচনায় বিরোধী দলের বিধায়ক তথা জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হয়নি। এ নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তবে সে প্রসঙ্গে মন্ত্রীর জবাব, ‘‘ওঁদের ডাকলে আসেন না। বরং, নানা ভাবে বাগড়া দেন। সে জন্য যাঁরা আসেন তাঁদেরই ডেকেছি। কাজ না করে যারা বাগড়া দেওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের নিয়ে বসে দেরি করার দরকার নেই। যারা সব রকম ভাবে সহযোগিতা করবে, তাদের নিয়ে আলোচনা করছি।’’
এ দিন বৈঠকে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী তজমুল হোসেন, সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণ। ছিলেন তিন জেলার শাসক দলের বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতিরাও।
বৈঠকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বালুরঘাটের অশোক লাহিড়ী, তপনের বুধরাই টুডু, মালদহের গোপাল সাহা, ইংরেজবাজারের শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী— কোনও বিজেপি বিধায়কই ডাক পাননি। মালদহের বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের না-ডাকা ট্র্যাডিশনে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনকে দলে পরিণত করা হয়েছে।’’
তপনের বিজেপি বিধায়কের দাবি, ‘‘আমি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর তো দূরের কথা, আমার ব্লকের উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠকেও আমাকে ডাকা হয় না। একতরফা ভাবেই সরকার চালাতে চায় তৃণমূল।’’ বালুরঘাটের বিধায়কের দাবি, ‘‘গণতন্ত্রের ন্যূনতম সৌজন্যবোধ হারিয়ে ফেলেছে তৃণমূল।’’
জানা গিয়েছে, গত পাঁচ বছরে ২১৮৭ কোটি ৫৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯৭৭ টাকা পেয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। ৬৩৬টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করা হয়েছে। ৯৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আর্থিক ও অন্য সমস্যা কিছু রয়েছে। তা কাটিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। কতটা কাজ এগিয়েছে এ দিন দেখা হল। যে সমস্ত কাজ ৭০-৮০ শতাংশ হয়ে রয়েছে, সেগুলো ৩১ ডিসেম্বর বা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করা হবে।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাকি থাকা তালিকায় রয়েছে রাস্তা, সেতুর মতো কাজ। মন্ত্রীর দাবি, কোভিড-পরিস্থিতি, বালি-পাথর পেতে সমস্যা, ফরাক্কা সেতুর সংস্কার কাজের জন্য পাথরের গাড়ি আসতে না-পারায় সমস্যা ছিল। জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ হওয়ায় সমস্যা হয়। তাতে কাজ শেষ করতে বিলম্ব হচ্ছে।