প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দায়ে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে অনলাইন ক্লাস। বহু স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অনলাইনে ক্লাস শুরুও হয়েছে। কিন্তু ওই ক্লাস কীভাবে আরও ভাল করে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে শিক্ষকদের একাংশ সেভাবে সড়গড় নন। ওই সমস্যা কাটাতে মঙ্গলবার অনলাইনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসের মানোন্নয়নে কর্মশালা শুরু হয়। কোচবিহার কলেজের উদ্যোগে ওই কর্মশালায় জেলা তো বটেই, রাজ্য ও ভিনরাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও যোগ দিয়েছেন। ৮ জুন পর্যন্ত ওই কর্মশালা চলবে। উদ্যোক্তাদের দাবি, অনলাইন ক্লাসের মানোন্নয়নে এরকম কর্মশালা রাজ্যে প্রথম।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই কর্মশালার আয়োজনের বার্তা দেওয়া হয়। তাতেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে উৎসাহী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নাম নথিভুক্ত করেন। সবমিলিয়ে অংশ নিচ্ছেন দেড় শতাধিক শিক্ষক। ভিডিয়ো কনফারেন্সে আয়োজিত ওই কর্মশালার প্রথম পর্বে বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ রিমোট সেন্সিংয়ের তথ্য প্রযুক্তি ও দূরশিক্ষা বিভাগের প্রধান হরিশচন্দ্র কর্নাটক। উদ্বোধনী পর্বের বক্তাদের তালিকায় ছিলেন পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়। উপাচার্য বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পরিকল্পিত ভাবে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পরিকাঠামোও তৈরি করতে হয়।কোচবিহার কলেজের ওই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, সময়োপযোগী।”
কেন এমন কর্মশালা আয়োজনের ভাবনা? কোচবিহার কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, “লকডাউন শুরুর পর আমরাও অনলাইন ক্লাসে জোর দিয়েছি। বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস হচ্ছেও। কিন্তু একাংশের কাছে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার কিছু বিষয়ে কিছু অভাবের তথ্যও আলোচনায় উঠে এসেছে। পর্যায়ক্রমে কী করে ক্লাস আরও উন্নত করা যায়, সে ব্যাপারে নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে আরও অভিজ্ঞতা বাড়ানো দরকার বলে আমাদের মনে হয়।’’
উদ্যোক্তারা জানান, কোন অ্যাপ্ কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, কত পড়ুয়া অংশ নিতে পারবে, ক্লাস পরিচালনায় কীভাবে প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ করতে হবে সেসব কর্মশালায় বিশদে উঠে আসবে। দেখানো হবে ভিডিয়ো তৈরি, এডিটিং, আপলোডিংয়ের পদ্ধতি। অনলাইনে কীভাবে মূল্যায়ন হতে পারে সে ব্যাপারেও একটি পর্বে আলোচনা হবে। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের একজন কোচবিহারের ঠাকুর পঞ্চানন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক বিভূতিভূষণ বিশ্বাস বলেন, “ওয়েবসাইট তৈরি, ডিজাইন, ভিডিয়ো রেকর্ডিং, নির্দিষ্ট সময় মেনে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহারের মতো নানা বিষয় কর্মশালায় উঠে আসছে।” এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘পড়ুয়াদের অনেকের স্মার্টফোন নেই। আর্থিক সমস্যা, নেটওয়ার্কের দুর্বলতার মতো সমস্যা রয়েছে। এ সব প্রতিকূলতা কাটানো দরকার।’’