(বাঁ দিক থেকে) পতাকা হাতে মামার সঙ্গে অভিজিৎ। —নিজস্ব চিত্র।
ঘরের চার দেওয়ালই যেন ক্রিকেটের ময়দান। একই ঘরে মুখোমুখি প্রতিপক্ষ। আমদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের আজ, রবিবার যখন অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত সম্মুখ সমরে নামবে, তখন সেই একই লড়াই চলবে আলিপুরদুয়ার শহরের সারদা পল্লিতে। এক দিকে, ভারতের হয়ে গলা ফাটাবেন মামা মলয় দেবনাথ। আর অন্য দিকে, অস্ট্রেলিয়ার সমর্থনে পাড়া কাঁপাবেন ভাগ্নে অভিজিৎ দেবনাথ। গত ২৩ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা অভিজিতের জন্ম যদিও ভারতেই। কিন্তু কর্ম, পরিবার, বাড়িঘর সবই এখন অস্ট্রেলিয়ায়। ঘটনাচক্রে, বিশ্বকাপ চলাকালীনই ভারতে আত্মীয়দের বাড়িতে এসেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য প্রার্থনা করছেন এ দেশে বসেই।
বছর ছাপান্নর অভিজিৎ কর্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন ২৩ বছর আগে। গোটা পরিবার-সহ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নেওয়ার পাশাপাশি, সেখানে কৃষি দফতরের আধিকারিক পদে চাকরি করেন তিনি। স্ত্রী এবং দুই কন্যাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরাতে নিজের বাড়িতেই থাকেন। কয়েক দিন আগে জন্মভূমি আলিপুরদুয়ারে এসেছেন তিনি। শহরের সারদাপল্লিতে তাঁর মামার বাড়িতে রয়েছেন এখন। বিশ্বকাপ চলাকালীন ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি ম্যাচেই নজর ছিল অভিজিতের। তবে ফাইনালে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া উঠে যাওয়ার পরেই অভিজিৎ পুরোপুরি অস্ট্রেলিয়াকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমি অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। তাই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে আমি আমার দেশকেই সমর্থন করব। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেটের থেকে সাধারণ মানুষের নজর বেশি রাগবির দিকেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা শুরু হওয়ার আগেই আমি বিশ্বকাপ জিতে গিয়েছি। আমার জন্মভূমি ভারত এবং আমার দেশ অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে লড়াই করবে। যেই জিতুক, জয় আমারই হবে।’’
অভিজিতের মামা মলয় দেবনাথ বলেন, ‘‘বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল খেলা দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। ভাগ্নে অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা হওয়ায়, স্বাভাবিক ভাবেই অস্ট্রেলিয়াকে সমর্থন করবে। তবে আমি ভারতের হয়ে গলা ফাটাব। এক সঙ্গে বসেই দু’জন খেলা দেখব। দিনের শেষে ভারতই বিশ্বকাপ জিতবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’