আক্রান্ত: গণপিটুনিতে জখম
ফের গণপিটুনি ইংরেজবাজার শহরে। শনিবার দুপুরে রথবাড়িতে সাইকেল চোর সন্দেহে এক যুবককে নারকেলের দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে দফায় দফায় গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, প্রথমে গণপিটুনি দেওয়া হয় রথবাড়ি মোড় সংলগ্ন একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে। পরে তাঁকে নেতাজি কমার্শিয়াল মার্কেটের দোতলায় তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মীয়মাণ একটি ভবনের পাশে লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, মারধরের পরে দীর্ঘক্ষণ ওই যুবক সেখানেই পড়েছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে আহত যুবককে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম যুবক সুজিত সরকার ইংরেজবাজার শহরের বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দা। একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
মাস দেড়েক আগে লক্ষ্মী পুজোর রাতে শহরের পিরোজপুরে চোর সন্দেহে দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছিল। তার রেশ কাটতে না কাটতেই দিন চারেক পরে শহরেরই বাঁশুলিতলায় মোবাইল চোর সন্দেহে এক যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তার কিছু দিন পরে সুকান্ত মোড়ে এক যুবককে মোটরবাইক চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছিল। লাগাতার গণপিটুনি বন্ধ করতে পুলিশের তরফে কড়া আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি সচেতনতায় শহরজুড়ে মাইকিংও করা হয়। তার পরে কিছু দিন বন্ধ ছিল। ফের শনিবার ভর দুপুরে ব্যস্ততম রথবাড়ি এলাকায় গণপিটুনি ঘটল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতাজি কমার্শিয়াল মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে পরপর সাইকেল চুরি হচ্ছিল। অভিযোগ, এ দিন দুপুরে সুজিতকে সাইকেলের তালা ভাঙার একটি যন্ত্র নিয়ে ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে লোকজন এবং তাকেই সাইকেল চোর সন্দেহে একদল উত্তেজিত মানুষ গণপিটুনি দেওয়া শুরু করে। প্রথমে পেট্রল পাম্পের কাছে প্রকাশ্যে কিল-ঘুষি-লাথি-চড় চলে। তার পরে মার্কেটের দোতলায় নির্মীয়মাণ ঘরের পাশে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। অভিযোগ, যুবক প্রায় দেড় ঘণ্টা জখম অবস্থায় সেখানে পড়েছিলেন। এ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বারবার এই গণপিটুনিতে শহরের মানুষের সহিষ্ণুতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘গণপিটুনি বরদাস্ত করা হবে না। পদক্ষেপ করা হবে।’’