—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রতিবেশী নাতনীর ‘প্রেমে পড়েছিলেন’ বৃদ্ধ। কিন্তু, দু’জনেই বুঝতে পারেন সমাজ তাঁদের সম্পর্ক মানবে না। দুই পরিবারেই অশান্তি চলছিল। স্থানীয়দের দাবি এমনই। শনিবার ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধ এবং ১৯ বছরের তরুণীর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গেল একই গাছে। এর পরেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি পুর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধূপগুড়ির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের সঙ্গে স্থানীয় এক তরুণীর ‘সম্পর্ক’ নিয়ে অশান্তি হয় পরিবারে। কারণ, বেশ কিছু দিন আগে ষাটোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অসমবয়সি ওই ‘নাতনি’র সঙ্গে। পরিবারের বাধা পেয়ে দিন দুই আগে দু’জনে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েও গিয়েছিলেন। নিখোঁজ থাকার পর শনিবার সাতসকালে দু’জনকেই দেখতে পান বাড়ির লোকজন। তবে মৃত অবস্থায়। বাড়ির উঠোনে একটি গাছে বাবা এবং তাঁর ‘প্রেমিকা’কে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান ওই বৃদ্ধের ছেলে। খবর চাউর হতেই এলাকাবাসী জড়ো হন সেখানে। খবর দেওয়া হয় ধূপগুড়ি থানায়। পুলিশ দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের পাঠিয়ে দেয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সমাজ এবং পরিবারের ‘ভয়ে’ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ওই দু’জন। দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃতা তরুণীর পরিবারের এক সদস্যা জানান, এর আগেও ওই বৃদ্ধের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের মেয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় কীর্তন শুনতে যেত দু’জনে। সেখান থেকে ঘনিষ্ঠতা। আগেও এক বার মেয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে চলে গিয়েছিল। সে বার সবাই মিলে ফিরিয়ে আনি। কিন্তু আবার দু’দিন আগে মেয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। কোনও খোঁজ না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। আজ (শনিবার) দু’জনকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।’’
অন্য দিকে, মৃত বৃদ্ধের পুত্র বলেন, ‘‘মেয়েটি কয়েক দিন আগেও আমাদের বাড়ি এসেছিল। ওর পরিবারের লোক জন এসে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। তার পর বাবা আর ওই মেয়েটি দু’জনেই নিখোঁজ ছিল দু’দিন। গতকাল রাতে বাড়ির সামনে দু’টি সুপারি গাছের মাঝে বাঁশ লাগিয়ে দু’জনে আত্মহত্যা করেছে।’’
যদিও আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনও কারণ, তা এখনও স্পষ্ট করেনি পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার ডিএসপি (অপরাধ) বিক্রমজিৎ লামা বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। তবে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’