ছবি: সংগৃহীত
উত্তরবঙ্গে ১৫ মিটারের বেশি উচ্চতার কোনও কংক্রিট নির্মাণ করতে গেলে তার জন্য যে ‘ফায়ার লাইসেন্স’ প্রয়োজন সেটা পেতে যেতে হতো কলকাতায় টেকনিক্যাল এক্সপার্ট কমিটির কাছে। উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, এখানেই ওই কমিটির শুনানির সুবিধা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা হোক। সেই কাজ খুব শীঘ্র হতে চলেছে বলে দমকল সূত্রে খবর।
কয়েকদিন হল শিলিগুড়িতে স্টেশন ফিডার রোডে ডেপুটি অধিকর্তার জন্য একটি অফিস ও আবাসন তৈরির চিঠি এসেছে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা টেকনিক্যাল এক্সপার্ট কমিটি গড়া না হলেও বহুতল ভবন নির্মাণের নথি জমা এবং শুনানির কাজ এখান থেকেই হবে। সেই জন্য একজন ডেপুটি অধিকর্তা পদমর্যাদার আধিকারিককে এখানে বহাল করা হচ্ছে বলে ওই সূত্রের দাবি। উত্তরবঙ্গের সব জেলার ক্ষেত্রেই নতুন বহুতল ভবন নির্মাণের কাজে আর কলকাতায় যেতে হবে না বলেই জানাচ্ছেন দমকল আধিকারিকরা।
দমকল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, উত্তরবঙ্গে ডেপুটি অধিকর্তা আগে ছিল। কিন্তু এক আধিকারিক অবসরগ্রহণ করার পরে ডেপুটি অধিকর্তার পদটিই উত্তরবঙ্গ থেকে উঠে গিয়েছিল। সেই পদে নতুন করে আধিকারিক বহাল হচ্ছেন। দমকল দফতরের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ হয়েছে। আমরা উত্তরবঙ্গে আবার সেই সুবিধা যাতে তৈরি করা যায়, তার কাজ দ্রুত শেষ করছি।’’ কর্তারা জানান, ডেপুটি অধিকর্তার নীচের কোনও আধিকারিক ‘ফায়ার লাইসেন্স’এর ওই ছাড়পত্র দিতে পারেন না। প্রাথমিকভাবে ডেপুটি আধিকারিক প্রকল্পের নথি দেখে পরে কলকাতায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন। গত সপ্তাহে কলকাতা থেকে চিঠি দিয়ে শিলিগুড়ির দমকল আধিকারিকদের জানানো হয়েছে, স্টেশন ফিডার রোডে ডেপুটি অধিকর্তার দফতর এবং আবাসনের মেরামতির কাজ দ্রুত শেষ করতে। উত্তরকন্যাতেও কমিটির বৈঠক যাতে হতে পারে, তা দেখতে বলা হয়েছে কর্তাদের।
নির্মাণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন ক্রেডাইয়ের উত্তরবঙ্গের সভাপতি নরেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘আমরা প্রায় দেড় বছর থেকে এই দাবি জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বলেছি। কলকাতায় দৌড়ঝাঁপ বেশ অসুবিধাজনক।’’ ব্যবসায়ীরা জানান, এখন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ১৫ মিটারের বেশি উচ্চতার প্রায় ৬০টি প্রকল্প চলছে। অনলাইনে আবেদনের পর হাতে হাতে ভবনের নানা নথি জমা করতে হতো। কাজের জন্য ছুটতে হতো কলকাতাও। নির্মীয়মান প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার এবং ডেভেলপারকে একসঙ্গে অন্তত চারবার কমিটির সদস্যদের কাছে ছুটতে হতো। উত্তরবঙ্গে ডেপুটি অধিকর্তার অফিস হলে সেই ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে।
কলকাতায় বাড়ি তৈরির নিয়ম-নীতি থেকে উত্তরবঙ্গের নিয়ম কিছু ক্ষেত্রে আলাদা। তাই স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের ওই কমিটিতে নেওয়ার দাবিও তুলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে এখনও কোনও চিঠি দমকল দফতর থেকে সংগঠনগুলিতে না পাঠানো শুরু হয়নি বলে দাবি সূত্রের।