ট্যাব হাতে এক ছাত্রী। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্কুল পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা পাঠাতে সরাসরি পদক্ষেপ করছে দার্জিলিং জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস। দার্জিলিং জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, সেখান থেকে সরাসরি ট্যাবের টাকা ব্যাঙ্কে টাকা পাঠানো হচ্ছে। ব্যাঙ্ক থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। ট্যাব নিয়ে অভিযোগের পরে স্কুল কিংবা ট্রেজারি অফিসের কর্মীদের উপর কর্তৃপক্ষ কি ভরসা পারছে না, সেই প্রশ্ন উঠছে। ট্যাবের টাকা গায়েবে শিক্ষক এবং কর্মীদের একাংশকে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
দার্জিলিং জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, সেখানে ১৩টি স্কুলের ২৪০ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা গায়েব হয়েছে। অভিযোগের পরে তদন্তে ঢিলেমি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। দ্রুত সেই পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করছিলেন আধিকারিকেরা। তাতেই স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে সরাসরি ব্যাঙ্কে টাকা পাঠিয়ে বিলি হবে বলে দাবি। দার্জিলিঙের ডিআই (মাধ্যমিক) তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা সরাসরি পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং টাকা ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দিয়েছি। যে পড়ুয়াদের টাকা গায়েব হয়েছে সেখান থেকে সরাসরি বিলি হবে। আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে টাকা পাওয়ার কথা ওই পড়ুয়ারা।’’
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এত দিন স্কুলগুলি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে আপলোড করত। পড়ুয়াদের সমস্ত পরিসংখ্যান জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসেও পাঠিয়ে দেওয়া হত। রাজ্য থেকে ট্যাবের টাকা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে যেত। সেখান থেকে অ্যাকাউন্ট নম্বর আবার যাচাই হত বলে দাবি। টাকা-সমেত তা পাঠানো হত ট্রেজারিতে। ট্রেজারি থেকে টাকা যেত পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ, সেই প্রক্রিয়ায় টাকা গায়েব হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে। প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা তার দায় এড়াতে পারে কি না সেই প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ এবং বিরোধী দলগুলি। পাহাড়ের দার্জিলিঙে সেই প্রক্রিয়ার কিছুটা বদল আনা হল বলে দাবি।
শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার তরফে জানানো হয়েছে, ট্যাবের টাকা গায়েব হওয়া পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। পরে তা যাচাইও করে নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি। বুধবার শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। তারা স্কুল পরিদর্শককে স্মারকলিপি দিয়েছে। সংগঠনের অভিযোগ, ট্যাব তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। শাসক দলের নেতারা এরসঙ্গে জড়িত। ২-১ জনকে গ্রেফতার করে আইওয়াশ করার চেষ্টা হচ্ছে। জেলা সম্পাদক অঙ্কিত দে বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরের বড় মাথারা ট্যাব দুর্নীতিতে যুক্ত রয়েছে। শাসক দলের রাঘব বোয়ালদের কাছে যে টাকা যায়নি কি করে বিশ্বাস করবো। সঠিক তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার চাই।’’
পাল্টা শিলিগুড়ির তৃণমূলের শিক্ষক নেতা সুপ্রকাশ রায় বলেন, "বামেরা অপ্রাসঙ্গিক। যারাই যুক্ত থাক তদন্তে স্পষ্ট হবে।"