আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল।
বিড়ালের কামড়ে জখম মা নিতে গিয়েছিলেন জলাতঙ্কের প্রতিষেধক ‘অ্যান্ট-রেবিস ভ্যাকসিন’ (এআরভি)। যদিও সে প্রতিষেধক মায়ের বদলে ভুল করে তাঁর কোলে থাকা দশ মাসের ছেলেকে দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক নার্সের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ওই ঘটনার প্রতিবাদে শিশুর পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়েরা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, ‘‘ঘটনার অভিযোগ পেয়ে শিশুটির বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেছি। নার্স না জেনে এটা করেছেন। অভিযুক্ত নার্সকে শো-কজ় করা হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের ভেলুরডাবরি এলাকার বাসিন্দা এক গৃহবধূ তাঁর দশ মাসের পুত্র সন্তানকে কোলে নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন নিতে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভ্যাকসিনের কাগজ তুলে দিয়ে লেখালেখি শেষে, ফের কাগজ নিজের হাতে নিয়ে ইঞ্জেকশন নেওয়ার জন্য তৈরি হতে থাকেন গৃহবধূ। অভিযোগ, সে সময়ে এক জন নার্স কিছু বুঝে ওঠার আগেই গৃহবধুর কোলে থাকা দশ মাসের শিশুর হাতে ওই প্রতিষেধকের ইঞ্জেকশন দেওয়া শুরু করেন। ওই গৃহবধূর চিৎকারে অবশ্য কিছুটা ‘এআরভি’ দিয়ে সুচ বার করে নেন নার্স। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন বধূর পরিবারের সদস্যেরা। অভিযোগ, ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে, বাচ্চাটির জ্বর আসে। এর পরে, হাসপাতাল সুপারেরহাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিশুর বাবা।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনা জানতে পেরে বাচ্চাটিকে হাসপাতালেরই শিশু বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, যে কোনও ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়া ৩০ মিনিটের মধ্যে হয়। এই ভ্যাকসিনে শিশুটির তেমন কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নই। ইঞ্জেকশন দিলে বাচ্চাদের জ্বর হয়ে থাকে। তাতে দুশ্চিন্তার তেমন কিছু নেই। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কৃষাণু সিংহ বলেছেন, ‘‘যদি কোনও ভ্যাকসিন দেওয়ার পর পরই প্রতিক্রিয়া না হয়, সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে অন্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। ভবিষ্যতে বাচ্চাটির বড় ধরনের কিছু হবে না বলেই আমার মনে হয়।’’