এই সেই সদ্যোজাত। ছবি: অমিত মোহান্ত।
হাতের ব্যান্ডেজ কাটতে গিয়ে সদ্যোজাতের আঙুল কেটে ফেলল এক নার্স। সোমবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল। আপাতত অভিযুক্ত ওই নার্সকে পাঁচ দিনের ছুটিতে পাঠিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে ওই নার্সের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ মিলেছে। আপাতত ওকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুকুমার দে বলেন, ‘‘হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসককে নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’
ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ৬ জুন তাঁর আট দিনের শিশুকন্যাকে ভর্তি করেছিলেন বালুরঘাট থানার বাসুলের বাসিন্দা বাবলা মণ্ডল। চিকিত্সার জন্য শিশুটিকে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল। সোমবার তাকে হাসপাতাল ছেড়ে দেওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু এ দিন সকালে পরিবারের লোকজন শিশুটির বাঁ হাতের আঙুলে ব্যান্ডেজ বাঁধা দেখেন। ব্যান্ডেজ খুলতেই দেখা যায় তার হাতের আঙুল কাটা।
অভিযোগ, রবিবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ স্যালাইনের চ্যানেলের জায়গায় বাঁধা ব্যান্ডেজ খুলতে আসেন রাখি সরকার নামে এক নার্স। ব্যান্ডেজ খুলতে গিয়ে ওই সদ্যোজাতের বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল কেটে ফেলেন তিনি। শিশুটির পরিবারের আরও অভিযোগ, এই ঘটনার কথা তাঁদের না জানিয়ে কাটা আঙুলটি ডাস্টবিনে ফেলে দেন অভিযুক্ত ওই নার্স। এমনকী চিকিত্সকদেরও এই ঘটনার কথা জানাননি তিনি। পরে এই বিষয়টি শিশুর পরিবারের চোখে পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তাঁরা। বিক্ষোভ দেখান হাসপাতালে। পুলিশ এসে পরিস্থতি সামাল দেয়। পরে হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস এই ঘটনার কথা স্বীকার করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি শিশুটির যাবতীয় খরচ বহন করার কথাও বলেন। শিশুটির চিকিত্সার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তিরত করা হয়।
কিন্তু সেখানে প্লাস্টিক সার্জারির পরিকাঠামো না থাকায় ফের বালুরঘাট হাসপাতালে ফিরে যান রোগীর আত্মীয়রা। সেখানে সুপারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুকুমার দে বলেন, ‘‘ওই শিশুর চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। বিকেলে ওই শিশুকে ফের বালুরঘাটে ভর্তি করে মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে।’’