ফাইল চিত্র।
করোনার পরীক্ষার পরিকাঠামো বাড়ছে। অথচ, দিনকে দিন লালারসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আলিপুরদুয়ারে। চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, বেশ কিছু ক্ষেত্রে রোগীর সংস্পর্শে যাঁরা আসছেন, তাঁদের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে না। একই ঘটনা জ্বর ও সর্দি, কাশির রোগীদের ক্ষেত্রেও হচ্ছে বলে অভিযোগ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। যাঁদের পরীক্ষার প্রয়োজন, তাঁদের সকলের পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে দাবি করা হযেছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, করোনা পরীক্ষার হিসেবে আশপাশের সব জেলা থেকে এগিয়ে আলিপুরদুয়ার। জেলার ৬২টি চা বাগানের মধ্যে ৫৮টি চা বাগানে ইতিমধ্যেই করোনার পরীক্ষা হয়েছে। তাই এমন অভিযোগ তোলার কোনও অর্থই হয় না।
রাজ্যে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই জেলায় লালারসের নমুনা পরীক্ষায় ব্যাপক জোর দেন আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্য কর্তারা। যার জন্য জেলার তিনটি বড় হাসপাতালের পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহের জন্য ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রও চালু করেন তাঁরা। সেইসঙ্গে জেলায় করোনা পরীক্ষার জন্য ফালাকাটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ট্রুন্যাট মেশিন বসানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নমুনার পাহাড় জমে যাওয়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সাহায্যে ফালাকাটার পাশাপাশি জেলার আরও তিনটি হাসপাতালে ট্রুন্যাট মেশিন বসানো হয়। জেলার চিকিৎসকদের একাংশের কথায়, এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানোর সংখ্যাও কমে গিয়েছে।
কিন্তু অভিযোগ, তারপরও আলিপুরদুয়ারে দিনে দিনে করোনার পরীক্ষা কমছে। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স’ ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যে করোনার পরীক্ষা আরও বাড়ানোর দাবি তুলেছে। সংগঠনের শীর্ষ কর্তাদের কানেও আলিপুরদুয়ারের চিকিৎসকদের একাংশের ক্ষোভের কথা পৌঁছেছে।
সংগঠনের সম্পাদক মানস গুমটার অভিযোগ, “শুনতে পাচ্ছি, জেলায় কত করোনা পরীক্ষা হবে তা আমলাদের কেউ কেউ ঠিক করে দিচ্ছেন। যে জন্য অনেক ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাঁরা আসছেন কিংবা জ্বর ও সর্দি, কাশির রোগীদের পরীক্ষা কম হচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আলিপুরদুয়ারের বিষয়টি নিয়ে আমাদের রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থ হতে হবে।’’
জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “জেলায় যাঁদের যাঁদের করোনা পরীক্ষা প্রয়োজন, তাঁদের প্রত্যেকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চলছে। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আরও এক কর্তার দাবি, ‘‘আলিপুরদুয়ারে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাচ্ছে, এই বিষয়টা কিন্তু ঠিক নয়। কারণ, প্রথম দিকে পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হওয়ার কারণেই কিন্তু আরও কয়েকটি ট্রুন্যাট মেশিন বসা হয়েছে।’’