অর্থ মন্ত্রকে প্রস্তাব উত্তরবঙ্গ ব্যবসায়িক সংগঠন। — ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দ করার জন্য এক গুচ্ছ প্রস্তাব পাঠাল উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়িক সংগঠন ‘ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’ (ফোসিন)। প্রস্তাবে রয়েছে চা-শিল্পের উন্নয়নে প্রকল্প ঘোষণা, নেপাল ও কেনিয়ার চা আমদানি নিষিদ্ধ করা, পর্যটন শিল্পে নতুন প্রকল্প, শিলিগুড়িজলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এলাকাকে স্মার্ট সিটির অন্তর্ভুক্ত করা, বিভিন্ন ট্রেন চালু, উত্তরবঙ্গে এমসের মতো হাসপাতাল তৈরি প্রভৃতি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে প্রস্তাব আকারে বিষয়গুলো জানিয়ে ২০২৩-২০২৪ আর্থিক বছরের বাজেটে সে সব বিষয়ে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আবেদনকরা হয়েছে।
ফোসিন সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের প্রধান বিষয় চা এবং পর্যটন শিল্পের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নেপাল থেকে আমদানি করা চা দার্জিলিং চা বলে দেদার বিক্রির ফলে দেশীয় বাজার নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দার্জিলিং চায়ের কাটতি কমেছে বলে সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়া টি-ফোরাম’-এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চা-শিল্পে যুক্ত বিভিন্ন মহল। নেপাল এবং কেনিয়ার চা বিক্রি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেফোসিন। ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘চা-শিল্প কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, যা গত ১০০ বছরে দেখা যায়নি। কেন্দ্র যে সমস্ত প্রকল্পের কথা বলেছিল, সেগুলো কার্যকর হয়নি। সেগুলো কার্যকর করা হোক। নেপাল এবং কেনিয়ার চা বিক্রি নিষিদ্ধ না করলে এখানকার চা-শিল্প নষ্ট হবে। তেমনই পর্যটনের প্রসারে নতুন প্রকল্প ঘোষণার প্রস্তাবওদেওয়া হয়েছে।’’
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, উত্তরবঙ্গে রেলের অনেক প্রকল্প ঘোষণা হলেও বাস্তবে হয়নি। যেমন, নিউ জলপাইগুড়িতে ‘অ্যাক্সেল অ্যান্ড হুইল ফ্যাক্টরি’। প্রস্তাব রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আসানসোল যাতায়াতের ট্রেনের এবং শতাব্দীর মতো ট্রেন সময় মেনে চালানোর। বাংলাদেশ থেকে অনেকে পর্যটন বা চিকিৎসার জন্য এ দেশে আসেন। তাই নিউ চ্যাংরাবান্ধাতেপদাতিকের মতো ট্রেনের স্টপের প্রস্তাব রয়েছে। রয়েছে শিলিগুড়ি শহর এবং সন্নিহিত এলাকায় সার্কুলার রেল চালুর প্রস্তাব। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আলুয়াবাড়ি, ঠাকুরগঞ্জ,গলগলিয়া, নকশালবাড়ি, বাগডোগরা, শিলিগুড়ি জংশন হয়ে তা চালানোর আবেদন করা হয়েছে। রেলের অব্যবহৃত জমিতে দীর্ঘদিন বসবাস বা ব্যবসা করা মানুষজনের পুনর্বাসনের জন্য সেই জমি রাজ্যকে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়ার প্রস্তাবরাখা হয়েছে।
এ ছাড়া রয়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দরের মানোন্নয়ন, কলকাতা থেকে কোচবিহার, মালদহ, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, জলপাইগুড়ি বিমান পরিষেবার প্রস্তাব।
শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি শহর ক্রমেই বড় হচ্ছে। এখনই পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ না হলে সমস্যা বাড়বে উল্লেখ করে তাদের স্মার্ট সিটির মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অধীনে আনার প্রস্তাব দিয়েছে ফোসিন। সংগঠনের প্রস্তাব উত্তরবঙ্গে এমসের ধাঁচে হাসপাতালেরও। ডলারবিনিময়ের সুবিধা থাকলেও নেপাল এবং ভুটানের টাকা বদলানো বা বিনিময়ের সুবিধা উত্তরের অধিকাংশ ব্যাঙ্কে, বিশেষত সীমান্তের শাখাগুলোতে নেই। সেই ব্যবস্থার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।