—প্রতীকী ছবি
এ বার তিন লক্ষ নমুনা পরীক্ষার নজির গড়ল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি। রাজ্যে বর্তমানে করোনা পরীক্ষার ৫১টি ল্যাবরেটরির মধ্যে তারাই এখন পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা করেছে। সোমবার পর্যন্ত এই ল্যাবরেটরিতে ২,৯৮,৮০০ লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে আরও ১২০০ নমুনা পরীক্ষা হতেই ৩ লক্ষ নমুনা পরীক্ষার রেকর্ড ছুঁল এই ভিআরডিএল। গত মার্চের শেষ থেকে সমস্ত ল্যাবরেটরির ডাক্তার, প্রযুক্তিবিদ, কর্মীদের পরিশ্রমেই এই জায়গায় আসা সম্ভব হয়েছে, জানান দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা।
রাজ্যে লালারসের নমুনা পরীক্ষায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পরেই রয়েছে এসএসকেএম এবং আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ। এসএসকেএম প্রায় আড়াই লাখ এবং আরজি কর ২,১৪,১১৪টি নমুনা পরীক্ষা করেছে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভিআরডিএলের কাজে খুশি কর্তৃপক্ষও। সকলকে উৎসাহ দিতে শীঘ্রই কেক কাটার অনুষ্ঠানের কথাও ভাবা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘ওই ল্যাবরেটরির কর্মী, আধিকারিক সকলকেই কুর্নিশ। যে ভাবে শুরু থেকে কাজ করছেন তাঁরা, তাতে অভিনন্দন জানাই।’’
মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান তথা ভিআরডিএল-এর দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অরুণাভ সরকার বলেন, ‘‘শুরুতে যন্ত্রাংশ কম ছিল। একটি যন্ত্রে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নমুনা পরীক্ষা বেশি করতে রাত জেগে কাজ করতে হয়েছে।’’ এখন তিনটি আরটিপিসিআর যন্ত্র রয়েছে। এ ছাড়া মাস কয়েক আগে হেপাটাইটিস পরীক্ষার জন্য একটি ‘অটোমেটেড আরটিপিসিআর’ এসেছে। যা দিয়ে দিনে ৪ হাজার নমুনা পরীক্ষাও সম্ভব।
গত ২৯ মার্চ থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু হয় ভিআরডিএল-এ। তার আগে নমুনা নাইসেডে পাঠানো হচ্ছিল। সেখান পাঠানো এবং নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট মিলতে তিন-চার দিন লাগছিল। ১৭ মার্চ এসএসকেএম এবং ২৪ মার্চ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু হয়। ২৯ মার্চ থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনা পরীক্ষার অনুমোদন মেলে। ১২ অগস্ট এখানে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়ায়। ২৯ অক্টোবর ২ লক্ষ নমুনা পরীক্ষার নজির তৈরি হয়।
করোনা পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক শান্তনু হাজরা জানান, দার্জিলিং ছাড়া আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং জেলা থেকে নমুনা এখানে আসে। তবে গত কয়েক মাসে নমুনা তুলনায় কম আসছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে টেস্টিং, ট্রেসিংই মূল। তাই পরীক্ষার মাধ্যমে সংক্রমণ চিহ্নিত করে যত বেশি আলাদা করা যাবে, ততই নিয়ন্ত্রণে আসবে সংক্রমণ। আগে রোজ দু’হাজার নমুনা পরীক্ষা হত। এখন নমুনা আসছে ৬০০-৮০০। কোনও দিন ১০০০-১২০০। পরীক্ষা বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে।