উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।
শুধু তৃণমূলের কর্মীদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিতর্কে জড়ালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।
কয়েক দিন আগে, সাবিনাকে দলের তরফে উত্তর দিনাজপুর জেলা ‘দেখভালের’ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরে, বুধবার প্রথম জেলায় আসেন সাবিনা। এ দিন রায়গঞ্জে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল-সহ দলের জেলা নেতৃত্ব ও বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বক্তব্য রাখার সময়ে সাবিনা বলেন, “যিনি সকাল-সন্ধ্যা ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ বলবেন, তাঁকেই আমরা চাকরি দেব। সিপিএমের আমলে বড় ব্যাগ কাঁধে নেওয়াদের কী ভাবে চাকরি হয়েছে, খোঁজ নিন।” পরে অবশ্য সাবিনা দাবি করেন, তিনি বিভিন্ন দফতরে চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছেন। যদিও বিরোধীরা মন্ত্রীর বক্তব্যের সূত্রে শাসক দলকে বিঁধতে ছাড়েননি।
রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় এ দিন দুপুরে দফতরের কাজকর্মের পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দেন সাবিনা। ওই বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহও হাজির ছিলেন। বৈঠকের পরে, দলীয় সভায় সাবিনা ওই ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেন।
কিন্তু মেধা ছাড়া কী চাকরি দেওয়া সম্ভব? সাবিনার দাবি, “মন্ত্রীরা বছরে তিনটি করে চাকরি দিতে পারেন। সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে চাকরি দেব না কি? যেখানে মৌখিক পরীক্ষা থাকে, সেখানে আমার দলের ছেলেদের দশে দশ দেব, দিতে বলব। ওঁরা দলকে সহযোগিতা করেন। তবে লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে মেধাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে সরাসরি মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়। নিয়োগ কমিটিতে জনপ্রতিনিধিরা ছাড়া, প্রশাসনের কর্তারা থাকেন। সেখানে চাকরি প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা খতিয়ে দেখে নিয়োগ করা হয়।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত ও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম পালের দাবি, এ রাজ্যে তৃণমূলকে টাকা না দিলে চাকরি হয় না। সাবিনা কার্যত সে কথাই ঘুরিয়ে স্পষ্ট করলেন। বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের মন্তব্য, ‘‘মন্ত্রী প্রকাশ্যেই ঘুরিয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলছেন।” উদয়ন অবশ্য বলেন, “এ রাজ্যের বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিধায়ক টাকা নিয়ে বহু চাকরি দিয়েছেন। এক বিজেপি বিধায়ককে তোয়ালে করে ঘুষের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, পক্ষপাতদুষ্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সে নিয়ে নীরব।”
অস্ত্র কারখানার হদিস, ধৃত ৩
ডালখোলা: উত্তর দিনাজপুরের পড়শি জেলা বিহারের পূর্ণিয়ায় হদিস মিলল আগ্নেয়াস্ত্র কারখানার। বিহার পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাজ্যের ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’ (এসটিএফ) বিহার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ণিয়ার কুকরেন গ্রামে অভিযান চালায়। সেখানে কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও তা তৈরির সামগ্রী। তিন জন গ্রেফতার হয়েছে। পূর্ণিয়া জেলা পুলিশ সুপার আমির জাভেদ বলেন, ‘‘২০টি অর্ধনির্মিত পাইপগান, ১৯টি পিস্তলের ব্যারেল, ২০টি পিস্তলের ‘স্লাইডার’, ড্রিল মেশিন-সহ বেশ কিছু অস্ত্র নির্মাণের সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ নিজস্ব চিত্র