অবস্থার বদল হয়নি শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে

টানা বৃষ্টির কারণে জলছবি বদলায়নি শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে। তবে শুক্রবারের তুলনায় শনিবার বৃষ্টি একটু কম হয়েছে। তাতেও সকাল থেকেই জলমগ্ন হতে শুরু করে জলপাইগুড়ি পুর এলাকার বিভিন্ন এলাকা৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড় ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৭:৫০
Share:

জলবন্দি জলপাইগুড়ির গোমস্তাপাড়ার একটি এলাকা।

টানা বৃষ্টির কারণে জলছবি বদলায়নি শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে। তবে শুক্রবারের তুলনায় শনিবার বৃষ্টি একটু কম হয়েছে। তাতেও সকাল থেকেই জলমগ্ন হতে শুরু করে জলপাইগুড়ি পুর এলাকার বিভিন্ন এলাকা৷ সেচ দফতরের হিসাব অনুযায়ী এদিন সকাল পর্যন্ত জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ৮০.৬ মিলিমিটার৷

Advertisement

বৃষ্টির জেরে জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়া, মহামায়া পাড়া, কংগ্রেসপাড়া ছাড়াও শহরের ২, ৩, ১৫, ১৬, ২২, ২৩ ও ২৫নম্বর ওয়ার্ডের অনেক জায়গাতেই জল জমে৷ শহরে বেশ কিছু বাড়িতে ঘরের মধ্যেও জল জমে যায় ৷ ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা ৷ পুরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়ায় ত্রাণ বিলি করা হয়৷ ত্রাণ বিলি নিয়ে অভিযোগ করে এ দিন শহরের কিছু কিছু জায়গায় নিজেদের উদ্যোগে ত্রাণ বিলি করেন বাম কাউন্সিলররাও৷ সিপিএম কাউন্সিলার প্রমোদ মন্ডল অভিযোগ করেন, একটু বৃষ্টিতেই জলপাইগুড়ি শহর যে ভাবে জলমগ্ন হচ্ছে, তা পুরসভার ব্যর্থতাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে৷ তবে শহরে জল জমা খবর পেয়েই এ দিন জলপাইগুড়ি পুরসভার কর্তারাও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বের হন৷ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল বলেন, ‘‘অত্যাধিক বর্ষণের ফলেই ফের জলপাইগুড়ি শহরে জল জমেছে৷ তবে বৃষ্টি থামতেই বিভিন্ন জায়গা থেকে জল নামতেও শুরু করেছে।’’

শিলিগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে এ দিন তেমন জল না দাঁড়ানোয় সমস্যা হয়নি বলে জানানো হয়েছে। মহানন্দা লাগোয়া এলাকাগুলির অনেক জায়গা এদিনও জলে ডুবে থাকতে দেখা গিয়েছে। জল ছিল ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া কিছু এলাকাতেও। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টি কমে আসায় অনেক জায়গা থেকে শনিবার বিকেলের দিকে জল নেমে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

জলমগ্ন চম্পাসারির নেতাজি সুভাষ রোড। ছবি: সন্দীপ পাল

শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এদিন শহরের জল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন। অশোকবাবু জানান, পুরসভার টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা ভাল কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র পারিষদরা পথে নেমে খোঁজ রাখছেন। সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। কোথাও তেমন কোনও সমস্যা নেই বলেই জানি।’’ তাঁর দাবি, বৃষ্টি কমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই অধিকাংশ জায়গায় জল নামতে শুরু করেছে। মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত, শরদিন্দু চক্রবর্তী-সহ অন্যরা পথে নেমে বিষয়গুলি দেখছেন বলে জানানো হয়েছে।

শিলিগুড়ির চম্পাসারির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের সমরনগর, গণেশ ঘোষ কলোনি, ৪৫ নম্বরে ওয়ার্ডের বাঘাযতীন কলোনি এলাকায় বিভিন্ন রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে ছিল বিকেলের পরেও। জল ছিল দার্জিলিং মোড় লাগোয়া ৪৬ নম্বর শিবনগর, রাজীবনগর এলাকাতেও। ভক্তিনগর থানা লাগোয়া মোড়ে প্রধান সড়কে রাত পর্যন্ত জল ছিল। শাস্ত্রীনগর এলাকায় রাস্তা, মাঠে জল নামেনি অনেক জায়গাতেই। এদিনও জল জমে থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ৩১, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি, অশোকনগর, নিউ মিলনপল্লি, শীতলাপাড়ায় এলাকায়। বর্ধমান রোড লাগোয়া কয়েকটি এলাকাতেও এ দিন জল জমে থাকার সমস্যা কানে এসেছে। তিনদিন আগে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কালভার্ট। সেটি এদিনও মেরামতের জন্য কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুরসভার ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো। তিনি দাবি করেন, ‘‘ওটি কোনও কালভার্টই নয়। কিছু লোক নদী লাগোয়া নীচু জায়গায় বাড়ি করেছিল, সেখানে পরে নর্দমা তৈরি হয়। তার উপরে অস্থায়ী সিমেন্টের স্ল্যাব ভেঙে গিয়েছে।’’ এ ছাড়া জল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে বলে তাঁর দাবি।

নতুন করে বৃষ্টি শুরু হলে ফের শহরে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে অবশ্য পুরসভার পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement