বড়দিনের পিকনিকেও সংশয় কোচবিহারে

জেলার রসিকবিল থেকে রসমতি, তেকুনিয়া থেকে গোসানিমারি—শীতের হাল্কা আমেজ মাখা ছুটির সকালে কোথাও উপচে পড়া ভিড় নেই। রসিকবিলে হাতেগোনা কয়েকটি দল বনভোজনে এলেও কোচবিহার শহর লাগোয়া শালবাগান ছিল পুরোপুরি সুনসান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৭
Share:

প্লাস্টিক নয়, দূষণ রোধে ব্যবহার করুন শালপাতা। আর্জি মেটেলির একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। —দীপঙ্কর ঘটক

বড়দিনের মুখে শেষ রবিবারে কোচবিহারের পিকনিক স্পটগুলিতে নোটেরই হাহাকারের চিত্র।

Advertisement

জেলার রসিকবিল থেকে রসমতি, তেকুনিয়া থেকে গোসানিমারি—শীতের হাল্কা আমেজ মাখা ছুটির সকালে কোথাও উপচে পড়া ভিড় নেই। রসিকবিলে হাতেগোনা কয়েকটি দল বনভোজনে এলেও কোচবিহার শহর লাগোয়া শালবাগান ছিল পুরোপুরি সুনসান। বেলা গড়ালেও সেখানে বনভোজন-দলের দেখা মেলেনি। অথচ ফি বছর ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে জেলার প্রায় সব স্পটেই ভিড় উপচে পড়ে। মাইকে পছন্দের শিল্পীর গান, নাচের হুল্লোড়ে জমে ওঠে গোটা চত্বর। এ বার ভাটা সেই আনন্দেও।

রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের মারাত্মক প্রভাব সব ক্ষেত্রেই পড়ছে। পিকনিকে ভিড় হচ্ছে না। স্পট লাগোয়া অন্য ছোট ব্যবসায়ীরাও মার খাচ্ছে।” কোচবিহারের ডিএফও রথীন দাস জানান, ‘‘এখনও তেমন ভিড় নেই। সব স্পটেই নজর রাখছি।’’

Advertisement

বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের পিকনিক স্পষ্টগুলি মূলত দেখভাল করেন বন দফতরের কর্মী কিংবা স্থানীয় বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা। শালবাগান পিকনিক স্পটের পরিকাঠামোও তৈরি হয়েছিল বন, পর্যটন দফতর থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। শীতলখুচির গড়, মধুপুরের তোর্সা নদীর পাড় থেকে খোলটার নদীর কাছেও পিকনিকে হয়। কোথাও ভিড়ই জমছে না। ফলে গাড়ি ভাড়া, পার্কিং ফি, মাইক ব্যবসার মতো নানা ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন সাহা বলেন, “রসিকবিলে পিকনিক স্পটের কাছে সমিতির গাড়ি পার্কিংয়ে অন্য বার নভেম্বরের শেষ থেকেই ভিড় হয়। ডিসেম্বরে কোনও রবিবার এমনও হয়েছে পার্কিংয়ের জায়গা দিতেও সমস্যা হয়। অথচ এবার বড়দিনের আগের রবিবারেও ভিড় নেই। আয় তো কমবেই।” কোচবিহার জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সম্পাদক অনুপ অধিকারী বলেন, “গতবছরেও ডিসেম্বর পড়তেই পিকনিকের জন্য গাড়ি বুকিংয়ের ব্যাপক চাহিদা ছিল। এ বার অনেকে খোঁজ করলেও ভাড়া কেউ নিচ্ছেন না।”

এই পরিস্থিতিতে আগামী ররিবার বড়দিনের ছুটিতে ছবি বদলানোর আশা করছেন অনেকেই। তবে যাঁরা ফি বছর বড়দিনে পিকনিকে যান, তাঁদের অনেকেই এ বারের পিকনিক নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। তুফানগঞ্জের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সুপ্রিয় দত্ত বলেন, “পাঁচ বছর ধরে বড়দিনের ছুটিতে পিকনিকে যাই। এ বার ব্যাঙ্ক থেকে এখনও বেতনের পুরো টাকা মেলেনি। সংসার চালাতেই হিমশিম অবস্থা, জানুয়ারি মাসেও পিকনিকে যাওয়া সম্ভব হবে না।” ফলে বড়দিনেও পিকনিকের সোনালি দিন আদৌ ফিরবে কিনা সে প্রশ্ন থাকছেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement