প্রতীকী ছবি।
ঝড়ে গৃহহীন হাজার হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। জখম হয়েছেন অনেকে। অথচ কলকাতা থেকে কোনও নেতা-মন্ত্রীর পা পড়েনি এই প্রান্তিক জেলা কোচবিহারে। শুধু দূরত্বের কারণেই কি কেউ এলেন না? না কি রয়েছে অন্য কোনও কারণ। আরও প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসন থাকতে শাসক দলকে চাঁদা তুলে মানুষের সাহায্য করতে হচ্ছে কেন।
বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “আমরা যত দূর জানতে পাচ্ছি তৃণমূল ত্রাণ দেওয়ার নামে নানা ভাবে চাঁদা তুলছে। প্রশাসন ও সরকার থাকতে শাসক দলকে চাঁদা তুলতে হচ্ছে কেন?” রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারির কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিজেপি তো কখনও কোনও ভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। তাই তাদের কথা গুরুত্বহীন। ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারেরর হাতে ২ লক্ষ টাকা করে আমরা তুলে দিয়েছি। সেই সঙ্গে ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে তা সরকারের কাছে পাঠান হয়েছে। বাকিদের পাশেও সরকার ও প্রশাসন রয়েছ।”
গত রবিবার সন্ধ্যার ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় কোচবিহার জেলার। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের সুটকাবাড়ি, মোয়ামারি, ঘুঘুমারি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন মানুষ। শুধু কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকেই সাত হাজারের মতো বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা পঞ্চাশ হাজার ছাড়়িয়ে যাবে। ওই দিন থেকেই দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কিছু খাবারের প্যাকেট, ত্রিপল নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। প্রশাসনের তরফেও অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ওই দিন থেকেই প্রশাসন মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার, ত্রিপল বিলি করেছে। ওই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে এগারোটি কিচেন চালান হয়েছে। সেই সময় থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ তুলতে শুরু করে, সরকারি ত্রাণ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বিলি করছেন। এর পরেই সমাজমাধ্যমে টিন, শাড়ি, মশারি-সহ নানা জিনিসপত্রের জন্য তৃণমূল নেতারা সাহায্য চেয়ে পোষ্ট করেন।
শুক্রবার দুপুরে একশ বান টিন নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় হাজির হন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে বাড়িতে ওই টিন পৌঁছে দেওয়া হয়। উদয়ন জানান, প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার টিন কেনা হয়েছে। তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষই সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, “সরকারি সাহায্য পাওয়ার কিছু পদ্ধতি আছে। সে জন্য সময়ের প্রয়োজন। আমরা তো আর বসে থাকতে পারি না।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কলকাতা থেকে কাউকে আসতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলার মন্ত্রী-সহ আমরা সকলে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছি।”