রাত পোহালেই বড়দিন। কিন্তু ত্রিহানা চা বাগানে অন্য বছরের মতো খুশির আবহাওয়া নেই। উৎসবের মেজাজ নেই।
বলেসারি বরাইক, সঞ্জু নাগাসিয়া, বিপিতা ওঁরাও, সাবির কুজুরেরা জানান, এমন বড়দিন তাঁদের আগে আসেনি। চার্চে নতুন রঙের প্রলেপও নেই। খাবার জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। সরকার এক দফায় ত্রাণ দিলেও আবার কবে মিলবে, তার নিশ্চয়তা নেই।
শুধু তাই নয়। কেউ কেউ বাগান ছেড়ে শিলিগুড়ি, বাগডোগরায় দিনমজুরের কাজও ধরেছেন। বাগানে লোকও তাই কম। নোট বাতিলের জেরে ব্যাঙ্ক টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় মালিকপক্ষ এই বাগান বন্ধ করেছে।
শ্রমিক অসন্তোষের কথা বলে গত ৮ ডিসেম্বর তরাইয়ের এই বাগান ছেড়েছেন কর্তৃপক্ষ। মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুললেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। বাগানটির একটি বিরাট অংশ শঙ্করবাবুর নির্বাচনী ক্ষেত্রের মধ্যেই পড়ে। শুক্রবার দুপুরে শঙ্করবাবু-সহ জেলা কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা বাগানের জাবরা ডিভিশনে গিয়ে শতাধিক শ্রমিক পরিবারগুলির মধ্যে ত্রাণ বিলি করেন। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল নেতারা বাগানে রাজনীতি করছেন।’’
আইএনটিটিইউসি-র উত্তরবঙ্গের নেতা অলোক চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করি না। তৃণমূলের মন্ত্রী বিরোধীদের আন্দোলনের জন্য বাগান বন্ধ হয়েছে বলে চলে যাচ্ছেন।’’ ২৭ ডিসেম্বর তাঁরা নকশালবাড়ির বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখাবেন।
ইতিমধ্যে শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যও বাগানে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তিনি বিধানসভার স্পিকার এবং শ্রমমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন। বিরোধীদের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘কে কী বলেছেন, জানি না। বাগান খুলতে প্রশাসন ও শ্রম দফতরের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’