সুনসান: কোচবিহারে ক্রেতা নেই চৈত্র সেলের বাজারে। নিজস্ব চিত্র
আলুর মন্দা বাজার নিয়ে সমস্যা তো রয়েইছে। তার সঙ্গে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলছে খারাপ আবহাওয়া। কখনও বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া, কখনও আবার ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। ওই দুয়ের জেরে বাংলায় নতুন বছর শুরুর দেড় সপ্তাহ আগেও কোচবিহারে জমেনি চৈত্র সেলের বাজার। তাই আশঙ্কা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।
উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের সদস্য তথা দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রাণা গোস্বামী বলেন, “শুধু দিনহাটা মহকুমায় গত বছর চৈত্র সেলের মরসুমে জামাকাপড়ের দোকানগুলিতে এক কোটি টাকার ব্যবসা হয়। ক্রেতাদের আশি শতাংশ গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা। এ বার আলুর দাম না পাওয়ায় তাদের হাতে টাকা নেই। তাই এখনও ভিড় জমছে না।” কোচবিহার জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম কুন্ডু বলেন, “আলুর দাম না মেলার প্রভাব যেমন রয়েছে তেমনি সমস্যা বাড়াচ্ছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা খারাপ আবহাওয়াও। শহরের ক্রেতারাও কিন্তু সে ভাবে ভিড় করছেন না। অথচ চৈত্র সেলের সময় ফুরোতে বাকি আর দেড় সপ্তাহ।”
ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহর তো বটেই জেলার অন্যত্রও চৈত্রের শুরু থেকেই ক্রেতা টানতে কেনাকাটায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে। জামাকাপড় থেকে জুতো সবেতেই তা মিলছে। কোথাও দশ শতাংশ ছাড়। কোথাও আবার পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত। একটি পোশাকের সঙ্গে একটি ফ্রি দেওয়া হচ্ছে কোথাও কোথাও। দোকান খুলে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচারও করছেন অনেকে।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, জেলাজুড়ে ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। লক্ষাধিক লোক ওই চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত। এ বার আলুর দামও মেলেনি। বন্ডও মেলেনি। ফলে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। কোচবিহারের এক আলু চাষি নয়ন দাস বলেন, “চাষের খরচ তোলা থেকে সংসার চালানো নিয়ে চিন্তায় আছি। চৈত্র সেলের কেনাকাটা করব কি করে?” উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ বুধবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতির পূর্বাভাস রয়েছে।” ব্যবসায়ীরা অনেকে বলছেন, ‘‘তাতেও ব্যবসা কতটা জমবে সংশয় থাকছেই। আলুর দাম না মেলার ঘাটতি যে এতেও মেটার নয়।’’