ফাইল চিত্র
রায়গঞ্জ মহকুমা থেকে সকালে কলকাতায় যাতায়াতের কোনও ট্রেন নেই। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মহকুমার বাসিন্দারা সকালে ওই ট্রেন চালুর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
৩১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেটের আগের দিন রায়গঞ্জে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী দাবি করেছিলেন, রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর উদ্যোগে দ্রুত রাধিকাপুর স্টেশন থেকে সকালে কলকাতাগামী ও একই সময়ে কলকাতা থেকে রাধিকাপুরগামী আরেকটি ট্রেন চলাচল শুরু করবে। তার আগে পৃথক সাংবাদিক বৈঠকে একই দাবি করেছিলেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তও।
তবে রেলের অন্দরমহলের খবর, লাইনের অভাব ও প্রযুক্তিগত সমস্যায় ওই স্টেশন থেকে আপাতত নতুন কোনও ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিচ্ছেন না রেল কর্তৃপক্ষ। একই ভাবে পরিকাঠামোর অভাবের জেরে কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জ স্টেশন থেকেও আপাতত নতুন কোনও ট্রেন চালুরও সম্ভাবনা নেই।
সম্প্রতি উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা রাধিকাপুর, কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জ রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন। রেল সূত্রে খবর, তার পরেই লাইনের অভাব ও প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এখনই ওই তিনটি স্টেশন থেকে নতুন কোনও ট্রেন চালুর সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
রায়গঞ্জ রেল স্টেশনের ম্যানেজার রাজু কুমারের বক্তব্য, রেলের তরফে স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে এখনও পর্যন্ত রাধিকাপুর, কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে সকালে কলকাতায় যাতায়াতের কোনও ট্রেন চালুর সরকারি নির্দেশিকা আসেনি।
রেল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতি দিন রাধিকাপুর স্টেশন থেকে কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জ স্টেশন হয়ে কাটিগারগামী তিন জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন, শিলিগুড়িগামী একটি ডিএমইউ ট্রেন-সহ কলকাতা ও দিল্লির একটি করে এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করে। পাশাপাশি, সপ্তাহে এক দিন রাধিকাপুর স্টেশন থেকে বাংলাদেশে একটি মালগাড়িও চলাচল করে।
রায়গঞ্জ স্টেশনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, রাধিকাপুর স্টেশনে মোট তিনটি লাইন রয়েছে। তার মধ্যে দুটি লাইনে সব সময় বিভিন্ন রুটের ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে। পাশাপাশি, ওই স্টেশনে বৈদ্যুতিন সিগন্যাল ব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। নতুন লাইন তৈরি ও নতুন সিগন্যাল ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ওই স্টেশন থেকে নতুন কোনও ট্রেন চালুর সম্ভাবনা নেই। একই ভাবে কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জ স্টেশনে লাইনের অভাব ও ইঞ্জিনের মুখ ঘোরানোর পরিকাঠামো না থাকায় ওই দুই স্টেশন থেকেও আপাতত নতুন কোনও ট্রেন চালুর সম্ভাবনা নেই বলেও জানানো হয়েছে।
বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ অবশ্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রী ও রেলের শীর্ষকর্তা দেবশ্রীদিকে দ্রুত রাধিকাপুর থেকে সকালে কলকাতা যাতায়াতের ট্রেন চালুর আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা আশাবাদী।’’
রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিতের কথায়, ‘‘কয়েক দিন আগে কলকাতায় পূর্ব রেলের কর্তারা আমাকে ওই ট্রেনের আশ্বাস দেন। কিছু দেরি হলেও ওই ট্রেন চালু হয়ে যাবে।’’
রায়গঞ্জের মিলনপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাইস্কুলের শিক্ষক তাপসকান্তি দাস বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা রায়গঞ্জ মহকুমা থেকে সকালে কলকাতাগামী ট্রেন চালুর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে চলেছেন। এ বার যেন ট্রেন নিয়ে ওই রাজনীতি বন্ধ করা হয়।’’