হাসপাতালে রকি। নিজস্ব চিত্র।
মুমূর্ষু রোগীর জন্য মিলল না অ্যাম্বুলেন্স বা দমকলের সাহায্য। হাসপাতালে পৌঁছনর আগেই মৃত্যু হল তাঁর। জালপাইগুড়ির ধূপগুড়ি স্টেশন এলাকায় এমনই এক অভিযোগ উঠল। ট্রেনে করে ওই রোগীকে হায়দরাবাদ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ধূপগুড়িতে নামানো হয়। কিন্তু স্টেশন থেকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য মেলেনি। দমকলে ফোন করা হলে সেখান থেকে নাকি বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য তারা ব্যস্ত তাই রোগীকে হাসপাতাল পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।
রকি হরিজন নামের ওই রোগী প্রায় ১৫ দিন ধরে ভুগছিলেন। রকির দিদি জানান, চিকিৎসার জন্য ট্রেনে ভাইকে হায়দরাবাদ নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ধূপগুড়ির কাছে তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাই তাঁকে স্টেশনে নামিয়ে সামনের কোনও হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করেন তাঁরা। স্টেশনে নামানোর পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনও অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি।
ট্রেন থেকে নামানোর পরই অ্যাম্বুল্যান্স এবং দমকলকে ফোন করেন স্টেশন সুপার অরবিন্দ কুমার। কিন্তু কোনও অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি। আর দমকল কর্মীরা নাকি জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী আসবেন তাই তাঁরা ব্যস্ত আছেন যেতে পারবেন না। অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানকেও ফোন করা হয়। শেষে কোনও উপায় না দেখে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি জোগাড় করে রকিকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়। রেল স্টেশনের আধিকারিকরাও হাসপাতালে যান রকির সঙ্গে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি রকিকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধূপগুড়ি স্টেশন সুপার অরবিন্দ পরে বলেন, “দমকলকে ফোন করা হলে তারা মুখ্যমন্ত্রীর সফর নিয়ে ব্যস্ততার কথা জানান। আর অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ফোন করা হলে তারা জানায়, মা বা ছোট শিশু হলে তারা আসবে। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়িতে করেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিংহ পরে জানান, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠান স্টেশনে। কিন্তু ততক্ষণে রোগীকে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনি এও প্রশ্ন তোলেন, ধূপগুড়ির মতো এত বড় গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশনে রেলের তরফে কোনও মেডিক্যাল টিম বা অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে না কেন?