দর্শন: মদনমোহন মন্দিরে রাসচক্র ঘোরাচ্ছেন কোচবিহারের বিজেপি সভানেত্রী মালতী রাভা। সঙ্গে সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। মঙ্গলবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
স্থানীয় সাংসদ হিসেবে রাসমেলায় আমন্ত্রণ পাননি দলীয় সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। সেটাকেই হাতিয়ার করে মেলায় তুমুল প্রচারে নেমে পড়ল বিজেপি।
মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপির স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে দলের কোচবিহার জেলা অফিস থেকে হেঁটে সাংসদ নিশীথকে নিয়ে মদনমোহন মন্দিরে যান। সাংসদের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের প্রধান দরজা। মন্দিরে পুজো দেন সাংসদ। পরে রাসচক্র ঘুরিয়ে প্রার্থনা করেন তিনি। এর পরেই পরোক্ষে তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শিষ্টাচার তো ওঁদের জানা নেই। আমাদের আছে। আগামী বছর আমরা ওঁদের আমন্ত্রণ জানাব।” সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “ভূমিপুত্রদের কুলদেবতা মদনমোহন। আগামী বছর থেকে যাতে ভূমিপুত্রদের হাত ধরেই পুজোর উদ্বোধন হয়, আমরা সে-ই চেষ্টাই করব।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত কোচবিহার সফর নিয়েও কটাক্ষ করেন নিশীথ। বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অন্য সময় এলে লোক পাবেন না। সেই জন্যেই মেলার ভিড়কে কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি।” সেই সঙ্গেই তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “মেলায় মুখ্যমন্ত্রী এলে যে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। কেউ পদপিষ্ট হতে পারেন।” সাংসদের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা এবং দলের শীর্ষ নেতারা। মালতী বলেন, “তৃণমূলের এখন আর কিছুই করার নেই। এখন শুধু যাওয়ার জন্য অপেক্ষা তাদের।”
তৃণমূলের জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, বিজেপি রাসমেলা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “রাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশ জুড়ে যা চলছে, তাতে বিজেপি থেকে মানুষ প্রতিদিন সরে যাচ্ছেন। তাই নানারকম কথা বলছেন তাঁরা।”
এবারে রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাম জনপ্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিজেপি’র কোচবিহারের সাংসদ নিশীথকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তা নিয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা রবিবার থেকেই ক্ষোভ জানাতে শুরু করেন। সোমবার রাসমেলার উদ্বোধন হয়। এ দিন দুপুরে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে কর্মীদের নিয়ে মেলায় হাজির হন সাংসদ।
বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য, সাংসদের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এ ছাড়া এখন বিজেপি’র পক্ষে মানুষ। তাই তাঁকে কোণঠাসা করে রাখতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। বিজেপি ওই বিষয়টিকে সামনে রেখেই প্রচার শুরু করেছে রাসমেলায়। বিজেপি জানিয়েছে, মেলায় একটি স্টল দেবে তারা। সেখানে পুস্তিকা ও নানা জিনিস তুলে ধরে দর্শনার্থীদের কাছে দলের কথা তুলে ধরতে চায় তারা।