ছবি: রয়টার্স।
বছরের তো শেষ দিন! তাই একটু বেপরোয়াই না হয় হওয়া গেল! কী-ই বা এসে গেল?
শহর শিলিগুড়ি জুড়ে এমনই মনোভাব দেখা গেল বছরের শেষদিনের সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত। করোনা ভুলে ও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই বর্ষবরণে মাতলেন শহরবাসী৷ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও মুখে মাস্ক ছিল না অনেকের। ‘নিউ ইয়ার্স পার্টি’র ভিড়ে মাতোয়ারা হল নয়া প্রজন্ম। আবার কোথাও জমল পিকনিক। অভিযোগ, কিছু পানশালায় স্বাস্থ্যবিধির সামান্যটুকুও মানা হয়নি। সব মিলিয়ে বিপদ বাড়ার আশঙ্কায় চিকিৎসকেরা।
দেশে করোনার নয়া স্ট্রেনের সংখ্যা বাড়তেই কড়াকড়ি শুরু হয়েছে নানা রাজ্যে৷ এ রাজ্যেও বর্ষবরণের আগে নানা নির্দেশিকা জারি করেছে হাইকোর্ট। পুলিশের তরফে আগাম শিলিগুড়ির সমস্ত পানশালা, হোটেলগুলিতে বেশি ভিড় না করার কথা বলা হয়। অধিকাংশ পানশালাগুলিতে কিছু নিয়ম মানা হয়। তবে কিছু পানশালা সন্ধে থেকেই ভিড়ে ঠাসা ছিল। পার্টিতে মাতোয়ারা তরুণ-তরুণীদের মুখে মাস্ক ছিল না। শহরের অদূরে কিছু রিসর্টে বড় করে অনুষ্ঠান করা হয়। সেবক রোড, মাটিগাড়ার বেশকিছু শপিং মলেও ভিড় জমে এ দিন বিকেল থেকে। মলে ঢোকার আগে প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপা হয়। মাস্ক বাধ্যতামূলক রাখা হয়। তবে মলে ঢুকে অনেকে নাক-মুখ থেকে মাস্ক নামিয়ে নেন। গলায় ঝুলতে দেখা যায় মাস্ক। এমনকি, শিশুদের মাস্ক না পরিয়েও মা-বাবারা ভিড় করেন মলে। বারবার বলেও লোকজনকেকে সচেতন করতে পারেননি মল কর্তৃপক্ষগুলি।
শহর জুড়ে জায়গায় জায়গায় পুলিশের নজর ছিল। ভিড় নিয়ন্ত্রণে বাড়তি পুলিশকর্মী নামানো হয় এ দিন। সকলকে মাস্ক ব্যবহারের জন্য মাইকিং করা হয় নানা ট্র্যাফিক পয়েন্টে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমে শহরের বিভিন্ন হোটেলগুলিতে। শুক্রবার বছরের প্রথম দিনে এই ভিড় বাড়বে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে শপিং মল, পার্কগুলিতে।
সেবক রোডের একটি শপিং মলে বসার জায়গায় আগেই ‘নো এন্ট্রি’ করে দেওয়া হয়, যাতে সেখানে দীর্ঘক্ষণ না বসতে পারে কেউ। এই ভিড় কমাতে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক, শিলিগুড়ি ফাইট করোনা সহ বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন ফের শহরবাসীকে সচেতন করতে রাস্তায় নামবে বলে জানা গিয়েছে। কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের কর্মকর্তা চিকিৎসক সন্দীপ সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘বর্ষবরণের রাত নিয়ে আমরা অনেকেই চিন্তায় ছিলাম। ভিড় না করার আবেদনও করেছি সকলকে। এই সময়টা আমাদের সাবধানে থাকা প্রয়োজন। ঢিলেঢালা করলেই বিপদ বাড়বে। নাইট ক্লাব, ফ্ল্যাট, ক্লাবগুলিতে পার্টি পুরোপুরি নিষিদ্ধকরণের প্রয়োজন ছিল।’’
দার্জিলিঙের নানা জায়গায় সংগঠনগুলির তরফে বাসিন্দাদের করোনা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে সচেতন করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।