হাইকোর্টের অনুমোদন পেয়ে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের নকশা নিয়ে জট কাটলেও, নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই আইনি জটিলতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নির্বিঘ্নে হাইকোর্ট ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করতে তাই আগেই জেলা আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে রাজ্য সরকার।
জলপাইগুড়িতে হাইকোর্ট ভবন নির্মাণের প্রস্তাবিত খরচ বেড়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ। নকশাও বদলে গিয়েছে পুরোপুরি। পুরোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল না করে নতুন ভাবে দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব নয়। সে কারণেই আইনি সমস্যা এড়াতে আটঘাট বেঁধে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে একটি ক্যাভিয়েট দাখিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ত দফতর। আইনি পরিভাষায় ‘ক্যাভিয়েট’ দাখিলের অর্থ হল, কোনও বিষয়ে মামলা দায়ের হলে একতরফা যাতে কোনও স্থগিতাদেশ জারি না হয় তার আবেদন করে রাখা।
বুধবার পূর্ত দফতরের তরফে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশসানের বিচারবিভাগীয় সেলে চিঠি পাঠিয়ে ক্যাভিয়েট দাখিলের আর্জি জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসেই দরপত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হবে। এ দিনের পূর্ত দফতরের পাঠানো চিঠিকে তার প্রথম ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১১-র স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস হওয়ার আগে ভবনের টেন্ডার করেছিল পূর্ত দফতর। প্রায় ৮০ কোটি টাকা ভবন তৈরির খরচ ধরে নিয়ে টেন্ডার করা হয়েছিল। কাজের বরাত পায় একটি সর্বভারতীয় নির্মাণ সংস্থা। কাজ শুরুর কয়েকদিন পরেই ভবনের নকশা নিয়ে আপত্তি জানায় হাইকোর্ট। থমকে যায় নির্মাণ। গত মাসে হাইকোর্ট নকশায় অনুমোদন দিয়েছে। নতুন নকশায় ভবন তৈরির খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬০ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পের খরচ সাড়ে চারগুণের বেশি বেড়ে যাওয়ায় পদ্ধতিগত কারণেই নতুন করে টেন্ডার করতে হবে।
কেন আশঙ্কা পূর্ত দফতরের?
২০১১ সালে কাজ থমকে যাওয়ার পরে বরাতপ্রাপ্ত নির্মাণ সংস্থা পূর্ত দফতরকে চিঠি পাঠিয়ে ক্ষতিপূরণ দায়ী করে। তারপরেই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় পূর্ত দফতর। গত বছর আগের টেন্ডার সরকারি ভাবে বাতিল হয়ছে। সরকারি সূত্রের খবর, সে সময়েই নির্মাম সংস্থা লিখিত ভাবে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল। তাতেই নতুন করে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করলে আগের বারের বরাত পাওয়া সংস্থা বেঁকে বসে মামলা করতে পারে বলে আশঙ্কা পূর্ত আধিকারিকদের। ক্যাভিয়েট দাখিলের সিদ্ধান্ত সে কারণেই। আইনি পদক্ষেপ নিয়ে অবশ্য পূর্ত দফতর বা প্রশাসনের কেউ মন্তব্য করতে চাননি। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার সরকারি অভিশংসক গৌতম দাস বলেন, ‘‘সার্কিট বেঞ্চের নতুন ভবন তৈরিতে যাতে আইনি সমস্যা না হয় তার জন্য রাজ্য সরকার সজাগ রয়েছে।’’