Ambulance Crisis

‘নিশ্চয়-যান’ চলেনি, নাকাল শিশু-প্রসূতি

বকেয়া ভাড়া মেটানো ও ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে শুক্রবার থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘নিশ্চয় যান’ পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন গাড়ির মালিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:১৪
Share:

অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সামনে সন্তানকে কোলে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মা। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বাহিন পঞ্চায়েতের কুমারজোল গ্রামের মঙ্গলি খাতুন ছ’দিন আগে, রায়গঞ্জ মেডিক্যালে পুত্র-সন্তান প্রসব করেন। শনিবার দুপুরে তাঁকে ছুটি দেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলির দাদা আনিসুর রহমান বলেন, “বোনের ছুটির পরে, মেডিক্যাল চত্বরে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নিশ্চয় যান পাইনি। পরে, ১,২০০ টাকায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে বোন ও তাঁর সদ্যোজাতকে বাড়িতে নিয়ে যাই।” পরিষেবা না পেয়ে ইটাহারের গোকর্ণের রাকিবা খাতুনও তাঁর চার দিনের পুত্রকে নিয়ে ছোট গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি ফিরেছেন।

Advertisement

বকেয়া ভাড়া মেটানো ও ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে শুক্রবার থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘নিশ্চয় যান’ পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন গাড়ির মালিকেরা। এ দিন জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর ১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সদ্যোজাতদের নিয়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে প্রসূতিদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে বলে অভিযোগ। পরিষেবা বন্ধ থাকায় বাড়ি থেকে চিকিৎসার জন্য প্রসূতি ও শিশুদের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিতে গিয়েও তাঁদের পরিবারের লোকেদের সমস্যা চরমে ওঠে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন প্রসূতি ও তাঁদের এক বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানেরা বিনা খরচে ‘নিশ্চয় যান’ পরিষেবা পান। এ দিন কালিয়াগঞ্জের উত্তর শিবপুরে বিষক্রিয়ার জেরে, বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে দশ মাসের এক কন্যাসন্তান। ওই শিশুটির মা সাদেকা খাতুন বলেন, “একাধিক বার ফোন করেও নিশ্চয় যান পাইনি। মেয়েকে এক আত্মীয়ের মোটরবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।” ওই পরিষেবা না পেয়ে এ দিন জেলা জুড়ে কোথাও টোটো, আবার কোথাও ভুটভুটি ও ছোট গাড়িতে করে গর্ভবতীদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে বাধ্য হন পরিবারের লোকেরা। কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ‘নিশ্চয় যান’ না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রসূতি ও পরিবারের লোকেরা। পাঞ্জিপাড়ার বিবেকানন্দ বিশ্বাস মোটা টাকায় গাড়ি ভাড়া করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাঁর স্ত্রী ও সদ্যোজাতকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ইসলামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে অনেকে টোটো ও ছোট গাড়ি ভাড়া করে প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের বাড়িতে নিয়ে যান। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণকুমার শর্মা অবশ্য বলেন, “জেলায় নিশ্চয় যান অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে কেউ সমস্যায় পড়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতরের জানা নেই। ১০২ নম্বরের সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা এই দিন স্বাভাবিকই রয়েছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement