উদ্ধার সাত দিনের শিশু। প্রতীকী চিত্র।
শিশু বিক্রির ‘চক্র’ ধরা পড়ল শিলিগুড়িতে। গোপনে একটি শিশু বিক্রির আগাম খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে শনিবার বিকেলে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে চার জনকে গ্রেফতার করে (স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ) ‘এসওজি’ ও মাটিগাড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের তিন জনই মহিলা। নবজাতক ওই শিশুটিকেও উদ্ধার করেছে পুলিশ। আপাতত শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশের দাবি, ধৃতেরা নবজাতক শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিত নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে। বহু দিন ধরেই এরা শিশু বিক্রির সঙ্গেজড়িত বলে পুলিশের দাবি। জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম প্রতীক দেবনাথ, গৌরী বাহাদুর ছেত্রী, বীণা দেবী ও প্রভা দেবী। চার জনেরই বয়স ত্রিশের কোঠায়। এদের মধ্যে প্রভা দেবী বিহারের মহম্মদপুরের বাসিন্দা। বাকিরা শিলিগুড়ির বাসিন্দা।
কয়েক দিন আগে পুলিশের কাছে খবর আসে, শিলিগুড়িতে শিশু বিক্রি হচ্ছে। এর পরে,ক্রেতা সেজে পুলিশ খোঁজখবর শুরু করে। এ দিন বিকেলে গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই চার জনকে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রভা দেবী বিহার থেকে শিশুটিকে শিলিগুড়িতে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছিল। গৌরী ও প্রতীক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। তারা এক নিঃসন্তান দম্পতিকে শিশু বিক্রি করবে বলে পরিকল্পনা করেছিল। সে জন্য তারা বীণার সঙ্গে যোগাযোগ করে। বীণা বিহারের পটনায় এক আইভিএফ (ইনভিটেরো ফার্টিলাইজ়েশন) কেন্দ্রে যোগাযোগ করে। প্রভা সাত দিন বয়সি ওই শিশুটিকে নিয়ে এ দিন শিলিগুড়িতে আসে। তার কাছ থেকে এক চিকিৎসকের কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে।যেখানে শিশুটির জন্ম ১৯ মার্চ হয়েছে বলে লেখা রয়েছে। শিশুর মায়ের নামও লেখা রয়েছে।
এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘গোপন সূত্রের খবরে অভিযান চালানো হয়। চার জনকে ধরা হয়েছে। শিশুকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ ধৃতদের এ দিন মাটিগাড়া থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গোয়েন্দা বিভাগের তরফেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শনিবার রাতে বিহারের উদ্দেশে পুলিশের একটি দল রওনা দেয়। ধৃত গৌরী ও বীণা দেবী শিলিগুড়িতে দু’টি ‘আইভিএফ’ কেন্দ্রে কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা বিভাগ। ‘আইভিএফ’ কেন্দ্রগুলিতেও তদন্তের স্বার্থে যাবে পুলিশ। আরও অনেকেই এই চক্রে জড়িত বলে পুলিশের অনুমান।