অশোক ভট্টাচার্য্য।—ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়িতে প্রশাসক বোর্ডের দায়িত্ব নিলেন বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এবং তাঁর পারিষদরা। সোমবার পুরসভায় গিয়ে নিয়ম মেনে তাঁরা দায়িত্ব নেন। তবে এই সিদ্ধান্তে বিড়়ম্বনায় পড়়েছে দলের একাংশ। সেই অংশের দাবি, গত পাঁচ বছর প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে মাথা উঁচু করে বোর্ড চালিয়ে যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল এতে তা ধাক্কা খেল। কারণ রাজ্যের তৃণমূল সরকারের মনোনীত পদ মেনে স্বীকার করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ বাম শরিক আরএসপি এবং কংগ্রেসও। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতায় বামেদের বৈঠক রয়েছে। স্থানীয় আরএসপি নেতা তাপস গোস্বামী জানান, বামফ্রন্টের আলোচনা চলছে। তাই এখন তাঁরা কিছু বলছেন না।
এ দিন প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক বলেন, ‘‘কাঁটার মুকুট মাথায় নিয়েই বসেছি। এই পরিস্থিতিতে পালিয়ে যাব না বলেই দায়িত্ব নিয়েছি। তার একটি কারণ নির্বাচন না-হওয়া। অন্যটি করোনা পরিস্থিতি। মানুষের পাশে থাকতে চ্যালেঞ্জের মধ্যেই দায়িত্ব নিতে হয়েছে।’’ কিন্তু এটা তো রাজ্যের মনোনীত বোর্ড, রাজ্যের নির্দেশেই চলতে হবে? স্বাধীন ভাবে কাজ করার ক্ষমতা নেই এই বোর্ডের। অশোকের জবাব, ‘‘কারও দাসখত দিয়ে আসিনি। সব জায়গায় যে ভাবে প্রশাসক বোর্ড হয়েছে সেই মতো দায়িত্ব নিয়েছি। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বোর্ডের প্রয়োজন নাও থাকতে পারে।’’
কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি প্রশাসকবোর্ডে নেই। অথচ এতদিন বাম বোর্ড চালাতে কংগ্রেস সমর্থন দিয়েছে। অশোকের দাবি, ‘‘এত দ্রুত বিষয়গুলো ঘটায় ভাবার অবকাশ মেলেনি।’’ কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘রাজ্যের তৃণমূল সরকারের অধীনে থাকার সমস্যা নেই অশোকবাবুদের। অথচ তৃণমূলের প্রতিনিধিদের রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা। ভবিষ্যতে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হবে কি না মানুষ প্রশ্ন তুলছেন।’’
এ দিনই প্রশাসক বোর্ডের বৈঠক হয়। ঠিক হয়েছে, যে প্রকল্প চলছিল তার কোনওটাই বন্ধ হবে না। মেয়র পারিষদ থাকার সময় বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাঁরাই থাকবেন। কলকাতার মতো বিদায়ী কাউন্সিলরদের কো-অর্ডিনেটর হিসাবে রাখার কথা রাজ্যকে জানানো হবে। প্রতিদিনের নাগরিক পরিষেবা ঠিক রাখা হবে। বিরোধী কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য, বিভিন্ন দফতরের সহায্য চেয়ে দ্রুত বৈঠক হবে।
এ দিন তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলররা রঞ্জন সরকারের নেতৃত্বে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে ‘আমফান’ নিয়ে সতর্কতা এবং ব্যবস্থা নিতে জরুরি বৈঠক ডাকতে বলেন। মঙ্গলবার ওই বৈঠক হবে। রঞ্জন বলেন, ‘‘শিলিগুড়়ির স্বার্থে রাজ্য মনোনীত বোর্ড করেছে। আমরা পাশে রয়েছি।’’