বাধা: শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুলিশ সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ, নাটকীয়তায় শেষ হয়েছিল মঙ্গলবারের মনোনয়ন পর্ব। বুধবার শুরুটাও হল সেখান থেকে। বেলা যত গড়িয়েছে, নির্দলদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সদর মহকুমাশাসকের দফতর চত্বরের মনোনয়ন কেন্দ্রকে ‘জেলা তৃণমূল কার্যালয়’ বলে মন্তব্য করে বিতর্কেও জড়িয়েছেন তিনি।
বুধবার সকালে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা তথা নির্দল প্রার্থী শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় মনোনয়নের লাইনে দাঁড়ালে হঠাৎ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার এসে বলেন, “এটা লাইন নয়, এখানে দাঁড়াবেন না।” তর্কাতর্কি শুরু হয়। শেখর মনোনয়ন কেন্দ্রের ভিতর ঢুকতেই আইসি এবং ডিএসপি সদর দু’জনে তাঁকে জাপটে ধরেন বলে দাবি। তাঁকে গাড়িতে তুলে পুলিশ জানায়, শেখরের নামে মামলা রয়েছে, জেরা করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যদিও পরে পুলিশের গাড়ি থেকে শেখরকে ছিনিয়ে নেন অনুগামীরা।
এর পরে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর অভিযোগ তোলেন, তাঁর হাত থেকে মনোনয়নের কাগজ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে খোঁজ করতে গেলে সংবাদমাধ্যমকেও সেখান থেকে বার হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে চার প্রার্থী এবং প্রচুর কর্মীকে নিয়ে মনোনয়ন দিতে ঢোকেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। ঢোকার মুখে কোভিড বিধির জন্য কম লোক নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন এক পুলিশ কর্মী। তাঁর দিকে আঙুল উঁচিয়ে সৈকতকে বলতে শোনা জানেন, “আমি সৈকত চট্টোপাধ্যায়, চিনতে হবে তো?” পুলিশকর্মী তাঁকে ছেড়ে দেন। এর পর সৈকত অনুগামীদের বলেন, “আয়, আয়। এটা জেলা তৃণমূল কার্যালয়।”
১৪ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দিতে ঢুকেছিলেন মালবিকা ঘোষ। কিছুক্ষণ পরেই তিনি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এসে দাবি করেন, সৈকতরা তাঁর কাগজ ছিঁড়ে দিয়েছে।
এর মধ্যে দুপুরেই শেখরের আইনজীবী কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি রবিকিসান কপূরের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, পুলিশি পাহারায় শেখরকে মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যেতে হবে। অভিযোগ, এ বার প্রায় চারশো মিটার দূরে পুলিশ সকলকে আটকে দেয়। বহু তর্কের পরে তিনটের পরে পুলিশ সকলকে ছাড়ে বলে দাবি। তিনটেতেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় শেষ। ফলে শেখর মনোনয়ন দিতে পারেননি। আইনজীবী পার্থ চৌধুরী বলেন, “আদালত অবমাননার মামলা হবে।”
সৈকত বলেছেন, “বিরোধী সব দল মনোনয়ন জমা দিল, আর নির্দল প্রার্থী দিতে পারল না! এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কেউ কাউকে আটকায়নি।” এসপি দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘শেখরবাবু হাই কোর্টের নির্দেশের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ছেড়ে দিই। তার পরে কী হয়েছে, জানি না।’’ নিজস্ব চিত্র।