ধুমধাম করে অন্নপ্রাশন দিল পতিরাম নাগরিক ও যুব সমাজ। নিজস্ব চিত্র
নাম তার লক্ষ্মী। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন জন্ম। তবে তার জন্মের পরেই, বালুরঘাট হাসপাতালেই মাতৃহারা হয় ওই শিশুকন্যা। গরিব আদিবাসী দিনমজুর পিতা নিরঞ্জন হাঁসদা মা-হারা দুধের শিশুকে নিয়ে কী করবেন ভেবে, অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। ছোট্ট মেয়ের খাওয়ার ব্যবস্থাই বা কী করে করবেন, সেই চিন্তায় ঘুম হারিয়েছিলেন তিনি।
নিরঞ্জনের পাশে দাঁড়িয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরাম থানা এলাকার নাগরিক ও একদল তরুণ যুবা। গত ছ’মাস ধরে দুধের প্যাকেট ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী নিয়ে লক্ষ্মীকে আপন করে নিয়েছেন পাড়াতুতো ওই মামারা। শুধু তাই নয়, করোনা আবহে কাজ হারানো তার বাবা নিরঞ্জনের জন্যেও দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা করেন ওই যুবকেরা। সোমবার, পাড়ার সেই মামারা তাঁদের আদরের ছোট্ট ভাগ্নি ছ’মাসে পা দিতেই, মেতে ওঠেন অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে।
মামার বাড়ির আদরের মতোই, হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসায় মুখে ভাত হল লক্ষ্মীর। নতুন জামা, নতুন থালা বাসন, পঞ্চব্যাঞ্জন আর পায়েসে জমজমাট সে অনুষ্ঠান। পতিরাম থানার আদিবাসী প্রধান এলাকা বর্ষাপাড়ায় এ দিন লক্ষ্মীর অন্নপ্রাশন হল।
এর মধ্যে ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে চলে গিয়েছেন লক্ষ্মীর বাবা। পিসি নমিতার কাছেই বড় হচ্ছে সে। এ দিন পিসির হাতেই ভাত খায় লক্ষ্মী। ব্যান্ডপার্টির বাজনা ও বেলুন দিয়ে সাজানো অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও থানার পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। নিমন্ত্রিতদের জন্য পাত পেড়ে ভুরিভোজের ব্যবস্থাও ছিল। পতিরামের ওই তরুণরা জানালেন, সামনে আরও বড় লড়াই। লক্ষ্মীকে বড় করে তুলতে হবে— নিয়ে পায়ে লক্ষ্মীকে দাঁড় করাতে হবে তো!