উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের টার্মিনাসে ‘সিএনজি’ বাস। নিজস্ব চিত্র।
এ বার উত্তরবঙ্গেও পথে নামতে চলছে ‘সিএনজি’ (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) বাস। সব ঠিকঠাক থাকলে, ভোট-পর্ব মিটতেই ওই বাস চালানো শুরু করবে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুটি ‘সিএনজি’ বাস পৌঁছেছে। আরও ২৮টি গাড়ি কেনা হয়েছে। সেগুলিও অল্প সময়ের মধ্যে কোচবিহারে পৌঁছবে।
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গাড়িতে এক দিকে পরিবেশের দূষণ কমবে, সেই সঙ্গে ডিজ়েলচালিত গাড়ির থেকে খরচও হবে কম। তবে ‘সিএনজি’ পাম্প উত্তরবঙ্গে হাতেগোনা, তা নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তা রয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় জানান, গ্যাস ভরানোর ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে বেসরকারি সংস্থার উপরে নির্ভরশীল থাকলেও, পরবর্তীতে ‘ফিলিং স্টেশন’-এর নিজস্ব পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সাতটি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে। সেই সাতটি স্টেশন গড়ে উঠলে সমস্যা তেমন আর থাকবে না।
নিগমের তরফে জানানো হয়েছে, একটি ডিজ়েলচালিত বাসের কিলোমিটার প্ৰতি খরচ ২২ টাকা ৩৫ পয়সা। সেই একই দূরত্বে ‘সিএনজি’ বাস চলাচলে খরচ পড়বে ১৬ টাকা ৩৫ পয়সা। তাতে প্ৰতি কিলোমিটারে ছয় (৬) টাকা করে সাশ্রয় হবে। তবে ডিজ়েলচালিত গাড়ির দামের তুলনায় ‘সিএনজি’ বাসের দাম বেশি। একটি ডিজ়েলচালিত বাসের দাম ৪২ লক্ষ টাকা, সেখানে সিএনজিচালিত একটি বাসের দাম ৪৪ লক্ষ টাকা। তবে ‘সিএনজি’ বাসে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি লাভ হবে বলে মনে করছে নিগম।
আগামী দিনে ‘সিএনজি’ ও বিদ্যুৎচালিত বাস আরও বেশি সংখ্যায় রাস্তায় নামানোর ইচ্ছা রয়েছে উত্তরবঙ্গে রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের। প্রথমে কোচবিহার-শিলিগুড়ি রুটে ওই সিএনজি-চালিত বাস চলাচল শুরু হবে। কারণ, ওই পথে পুন্ডিবাড়ির দীঘাপুলে একটি সিএনজি পাম্প স্টেশন তৈরি করা হবে। নিগম সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, একটি বাসে পাঁচটি সিলিন্ডার রয়েছে। তাতে গ্যাস পুরো ভর্তি থাকলে, একটি বাস ৪৫০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে পারে।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘সিএনজি বাস উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের মুকুটে একটি নতুন পালক। আগামী দিনে পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই এগিয়ে যাবে নিগম। সেই সঙ্গে আয় বাড়ানো ও সাশ্রয়ের দিকেও নজর দেওয়া হবে।’’
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমে বর্তমানে ৭৪২টি বাস রয়েছে। সবই ডিজ়েলচালিত। সেই সব বাসের অনেকগুলিই বহু পুরনো। তাতে ওই গাড়িগুলি থেকে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। সে সব আমূল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, খুব দ্রুত আরও পাঁচটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসও (সিএনজি নয়) রাস্তায় নামবে। সেগুলি কোচবিহার-কলকাতা ও শিলিগুড়ি-কলকাতা রুটে চলবে।