ছেলের বিরুদ্ধে নালিশ বাবা-মায়ের

নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যকুটিয়া জোতে বাড়ি মিনতিদেবীর। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দু’কাঠা জমিতে একটি ইটের ঘর। বিদ্যুৎ ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৬:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

মা-বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে জমি ও বাড়ি কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নিজের ছেলে। সেই ছেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন মা মিনতি পাল। ছেলের শাস্তি চেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হয়েছেন ৬০ বছরের ওই প্রৌঢ়া। থানাতেও অভিযোগ দায়ের করতে চান তিনি। সোমবার প্রধানের কাছে অভিযোগের কপি নিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, ‘‘ছেলে খেতে তো দেয়ই না। জমি ও বাড়ি কেড়ে নিয়ে মেরে ফেলতে চায়। সন্ধ্যার পরে কোনও কোনও দিন মারধরও করে।’’ তিনি জানান, এমন ছেলেকে তিনি বাড়ি থেকে বের করে দিতে চান। কিন্তু একা পারবেন না। তাই পুলিশের সাহায্য প্রয়োজন।

Advertisement

নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যকুটিয়া জোতে বাড়ি মিনতিদেবীর। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দু’কাঠা জমিতে একটি ইটের ঘর। বিদ্যুৎ ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই। তাঁর ৭০ বছরের অসুস্থ স্বামী শয্যাশায়ী। পাশেই এক কাঠা জমিতে তাঁর ছোটছেলের বাড়ি। বৃদ্ধা জানালেন, সংসার চালাতে একটি বাড়িতে মাসে ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন। তাতে কোনও দিন রান্না হয়, কোনও দিন না খেয়েই থাকতে হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মাসে ৪-৫ কেজি চাল এবং এক-দেড়শো টাকা দেন। তাতে কোনও রকমে সংসার চলে। তাঁর দুই ছেলে, দুই মেয়ে। কষ্ট করে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বড়ছেলে শঙ্কর কাঠ মিস্ত্রি, কাপড়ের দোকানও রয়েছে। বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। মা-বাবার খোঁজ পর্যন্ত রাখেন না বলে তাঁর অভিযোগ। ছোটছেলে শিবু বিয়ে করেছেন। তিনিও তাঁদের দেখেন না। মিনতিদেবী বলেন, ‘‘ছোটছেলেকে এক কাঠা জমি দিয়েছি। সে-ই অত্যাচার করে। বাকি জমিটাও নিতে চায়।’’

অভিযুক্ত শিবু জানান, তিনি দিনমজুরি করে খান। মা-বাবা বাড়ির জমি বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল বলে তিনি এক কাঠা কিনে নিয়েছিলেন। টাকা পরিশোধ আস্তে আস্তে করে দিতে চান। কিন্তু তার মা মানতে চান না বলে তাঁর দাবি। তিনি খেতে বললেও খান না। শিবু বলেন, ‘‘মা জমির টাকা চেয়ে গালিগালাজ করে। সেজন্য স্ত্রীও বাড়িতে থাকতে চায় না।’’ তাঁর বড়ছেলে শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অরুণ ঘোষ জানান, মিনতিদেবীর বিপিএল কার্ড নেই। আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়া যায়নি। বিল দিতে না পারায় বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মিনতিদেবীর উপর কোনও রকম অত্যাচার না হয় তা বলা হয়েছে।’’ বিডিও বাপি ধর বলেন, ‘‘কোনও সাহায্য যাতে করা যায় তা দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement