থামছে না বৃষ্টিপাত। যত্রতত্র নেমেছে ধস। — নিজস্ব চিত্র।
ক্রমশ আরও ঘোরালো হয়ে উঠছে সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের উত্তরাংশের বন্যা পরিস্থিতি। সিকিমে বৃষ্টি কমার নাম নেই। একই ভাবে বৃষ্টিপাত চলছে দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ তরাই এবং ডুয়ার্সে। পরিস্থিতি এমনই যে, সিকিমের ‘লাইফলাইন’ বলে পরিচিত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দিতে হল প্রশাসনকে। এর ফলে সিকিমের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল গোটা দেশের। যে হেতু, নিরাপত্তার খাতিরে জাতীয় সড়ক বন্ধ করা হল, তাই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেই আবার তা খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার গভীর রাত থেকে চলছে বৃষ্টি। কালিম্পং জেলার লিখুভিড় থেকে বন্ধ ছিল যান চলাচল। রবিবার সকালে জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায় নতুন করে ধস নামে। সেবক পেরিয়ে কালিঝোরা-লাটপানচার রোডের অবস্থা করুণ৷ শ্বেতিঝোরার কাছে জাতীয় সড়কের একাংশ ধসে গিয়েছে। রাস্তায় একাংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন পারাপার করিয়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশের ভিড় কমিয়ে রবিবার সম্পূর্ণ ভাবে জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন।
বন্ধ হল সিকিমের ‘লাইফলাইন’, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক।— নিজস্ব চিত্র
অবিরাম বৃষ্টির জেরে কালিঝোরা, রবিঝোরা, ২৭ মাইল-সহ একাধিক জায়গায় নতুন করে ধস নেমেছে। সিকিমেও বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই। ফলে, মাঙ্গন থেকে গ্যাংটক এবং মাঙ্গন থেকে সিংথামের রাস্তায় একাধিক জায়গা ইতিমধ্যেই ধসের কবলে পড়েছে। অন্য দিকে, লাচুংয়ের আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধার করা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে এয়ারলিফ্টের জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সিকিম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, লাচুংয়ে এখনও ১২০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন। ফলে উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
বিরামহীন বৃষ্টি চলছে উত্তরবঙ্গের তরাই এবং ডুয়ার্সের সমতলেও। যার জেরে এলাকার প্রতিটি নদীই ফুলেফেঁপে উঠেছে। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে দুর্ভোগে পড়েছেন বহু মানুষ। বর্ষণে জনজীবন বিপন্ন শিলিগুড়িতেও। একাধিক জায়গায় জল জমেছে। আবহাওয়া দফতরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, বৃষ্টি আরও কিছু দিন চলবে। উত্তরবঙ্গের ওপর নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হওয়ায় এই বিপত্তি বলেই দাবি তাঁরও।